Friday, November 22, 2024
spot_img
Homeজাতীয়রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে: সংসদে প্রধানমন্ত্রী

রমজানে বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে লাগাম টানা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পবিত্র রমজানে মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে থাকবে এবং বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দামে লাগাম টানা সম্ভব হবে। সরকারি পদক্ষেপের ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিশেষ করে দরিদ্র পরিবার, বয়স্ক, বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা নারীসহ নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি আসবে।

বুধবার সংসদের বৈঠকে সরকারি দলের সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে প্রশ্নোত্তরে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের সরকার। তাই জনগণের কষ্ট লাঘবে সরকার সবসময় সচেষ্ট। সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের মূল্য স্বাভাবিক রাখতে সব কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে ভোগ্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি অনেকাংশে সংযত করা সম্ভব হয়েছে। বিশ্ববাজারে কয়েকটি পণ্য যেমন– জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল, গম, সারসহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্য, ভোগ্যপণ্য ও শিল্পের কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপ অনুভূত হচ্ছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে বিভিন্ন শুল্ক ছাড় করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে আলী আজম মুকুলের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবাইকে অনুরোধ করব, গুজবে কান দেবেন না। সবাই সচেতন থাকলে আর গুজবে কান না দিলে, গুজব ছড়িয়ে কেউ সমস্যা তৈরি করতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে কোনোরকম মানুষের খাদ্য নিয়ে খেলতে না পারে, সে জন্য সরকার যথেষ্ট সচেতন রয়েছে। বহু পণ্য আমাদের আমদানি করতে হয়। এই পরনির্ভশীলতা কাটিয়ে নিজেদের উৎপাদন বাড়ানোর চেষ্টাও রয়েছে।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। মোবাইল কোর্টসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তার পরও যদি ইচ্ছাকৃতভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রমজান হচ্ছে কৃচ্ছ্রতা সাধনের মাস। রমজানে মানুষ যেন কম খাবার গ্রহণ করে, খাদ্য সংরক্ষণ করে। কিন্তু এখানে দেখা যায়, খাবার গ্রহণের বিষয়টি একটু বেড়েই যায়। প্রকৃতপক্ষে সে জন্য তো রজমান নয়।

তিনি বলেন, কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের দাম যদি বেশি কমে যায় তাহলে কৃষক ন্যায্য মূল্য পান না। আবার যদি দাম বেশি বেড়ে যায়, তাহলে নির্দিষ্ট আয়ের লোকের কষ্ট হয়। ভোক্তার জন্য কষ্ট হয়। এ জন্য দুটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হয়। এ ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট সচেতন।

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শুধু সরকারই সব দেখবে, সেটা তো নয়। যারা নির্বাচিত প্রতিনিধি আছেন, তাদেরও একটা দায়িত্ব রয়েছে। বাজার মনিটরে সবাই সহযোগিতা করলে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা এভাবে নিত্যপণ্যের মূল্য অসৎ উপায়ে বাড়াতে পারবে না।

তারাবি-সেহরিতে লোডশেডিং থাকবে না

তারাবিতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের বিষয়ে নাটোর-১ আসনের আবুল কালামের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, অনেক অর্থ ব্যয় করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে। ভর্তুকি অর্থে তা বিতরণ করা হয়। এখন বিশ্বব্যাপী তেল, এলএনজি, পরিবহনসহ সবকিছুর মূল্য বেড়ে গেছে। তার পরও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রচেষ্টা সরকারের রয়েছে। এটা ঠিক যে, জ্বালানি তেল ও এলএনজির সংকট আছে। কোনো কোনো কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পায় বা ব্যাহত হয়। তবে তারাবির নামাজ ও সেহরির সময় বিদ্যুতের সমস্যা হবে না।

একসময় দেশে ১০-১২ ঘণ্টা লোডশেডিং থাকলেও এখন সেই অবস্থা নেই উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তবে মাঝে মাঝে (লোডশেডিং) থাকা  ভালো। তা না হলে মানুষ অতীতকে ভুলে যাবে। অন্তত উপলব্ধি করবে, কোথায় ছিলাম আর কোথায় আছি।

আওয়ামী লীগের নুরুন্নবী চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটেছে। তাই অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি জ্বালানি, প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদাও ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। ফলে গ্যাস চাহিদার সরবরাহ সামঞ্জস্যপূর্ণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments