Monday, November 25, 2024
spot_img
Homeঅর্থনীতিহোটেলে সেবার মান বাড়াতে সরকারের সহযোগিতা চান উদ্যোক্তারা

হোটেলে সেবার মান বাড়াতে সরকারের সহযোগিতা চান উদ্যোক্তারা

দেশের হোটেল ও গেস্ট হাউসগুলোতে অতিথিদের সর্বোত্তম সেবা দিতে উন্নত হোটেল নির্মাণ, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সরকারের নীতি সহায়তার পাশাপাশি সেবার মান বাড়াতে দক্ষ জনবল বৃদ্ধি অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করেন এই খাতের ব্যবসায়ীরা। পর্যাপ্ত দক্ষ জনবলের অভাবে হোটেলগুলোতে বিশ্বমানের সেবা প্রদান কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এ ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল তৈরির প্রক্রিয়া আরো জোরালো করার দাবি জানিয়েছেন তারা। সরকারের সহায়তা পেলে দেশের অর্থনৈতিক অবদানে আরও শক্ত অবস্থান গড়ে তোলার সমূহ সম্ভাবনার কথাও জানান তারা।

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) এফবিসিসিআই’র বোর্ড রুমে হোটেল ও গেস্টহাউস বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির এক বৈঠকে এ খাতের ব্যবসায়ীরা বিষয়গুলো নিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেন। দেশের অর্থনীতি বিবেচনায় মাধ্যমিক পর্যায় থেকেই বইয়ে পর্যটন শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান ব্যবসায়ীরা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে অংশ নিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, পর্যটন আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। আমাদের পর্যটন খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে সিলেট, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়িসহ দেশের সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্রগুলোকেও কীভাবে আরও আধুনিক ও উন্নত করা যায় সে ব্যাপারে কাজ করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করে এফবিসিসিআই সভাপতি। এছাড়া পর্যটন খাতের উন্নয়নে এফবিসিসিআই’র সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিন হেলালী বলেন, পর্যটন শিল্পের জন্য দক্ষ জনবল তৈরির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে পর্যটন এলাকাগুলোতে হোটেল ও সেবার মান আরও উন্নত করার তাগিদ দেন তিনি।

কমিটির ডিরেক্টর ইনচার্জ ও এফবিসিসিআই পরিচালক ফখরুস সালেহীন নাহিয়ান বলেন, পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বড় হোটেল মোটেল নির্মাণের সময়ে উচ্চ ডিউটি দিয়ে নির্মাণ সামগ্রী আমদানি করতে হয়। যার ফলে হোটেলের খরচ অনেক বেড়ে যায়। হোটেল নির্মাণের ক্ষেত্রে শুল্ক মুক্তভাবে গ্লাস, ফার্নিচার ইত্যাদি আমদানি করা গেলে স্বল্প খরচে পর্যটকদের সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। আরব আমিরাত, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশে অনেক ব্র্যান্ডিং হয় উল্লেখ করে বাংলাদেশের পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে অনুরূপভাবে ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ কর্মসূচি গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। পাশাপাশি মেগা শপিংমল নির্মাণ, আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলার আয়োজনসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।

পরিকল্পিত ও সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করলে পর্যটন খাত ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতিতে ৩০ শতাংশ ভূমিকা রাখতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির চেয়ারম্যান ও সায়মন বিচ রিসোর্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেদুর রহমান। তিনি বলেন, প্রতিটি জেলার নিজস্ব কিছু সংস্কৃতি আছে। হোটেলগুলোতে স্যুভেনির আকারে সেগুলো পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে পারলে এ খাতের ব্যবসা আরো বাড়তে পারে। এছাড়া শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বা পাঁচতারকা হোটেলগুলোতে ভ্যাট ১৫% কমিয়ে ৮% করা হলে ভোক্তা বা পর্যটকরা উপকৃত হবে বলে জানান তিনি।

কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শিবলুল আজম কোরাইশী বলেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত ছড়িয়ে যেতে পারে পর্যটন শিল্প। একজন বাদাম বিক্রেতার মত উদ্যোক্তাও ক্ষুদ্র বিনিয়োগ করে লাভবান হতে পারে এ খাতে। তাই এই খাত অগ্রাধিকার পাওয়ার দাবিদার। দেশের ঋতু বৈচিত্র্য কাজে লাগানোসহ দক্ষ জনবল তৈরিতে ঢাকা ও স্থানীয় পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দরকার বলে জানান তিনি।

কো-চেয়ারম্যান ইরাদ আলি বলেন, হোটেলগুলোতে অ্যালকোহল আমদানির ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে ৪০ ভাগ ও স্থানীয় পর্যায়ে ৬০ ভাগ আমদানি করতে হয়। যা আমাদের জন্য কষ্টকর। বিদেশ থেকে আরও বেশি আমদানির অনুমতি দেওয়া উচিত।

এফবিসিসিআইর পরিচালক ও হোটেল স্টার প্যাসিফিকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে অভিযোগ করে জরিমানার টাকার একটা অংশ অভিযোগকারী পায়। এটির সুযোগ নিয়ে লাভবান হচ্ছে কুচক্রী মহল। যা ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করছে।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর পরিচালক হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, সেরনিয়াবাত মঈন উদ্দিন আব্দুলাহ, মহাসচিব মো. আলমগীর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান ও সদস্যরা।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments