বিপিএলের দীর্ঘ রেসে দেশিরা এগিয়ে থাকলেও ফাইনালের নায়ক বিদেশিরা সংখ্যায় বেশি। ক্রিস গেইলের ব্যাটে যেমন নিষ্পত্তি হয়েছে শিরোপার লড়াই; তেমনি জনসন চার্লস, সুনীল নারিন, আন্দ্রে রাসেল, কুমার সাঙ্গাকারা ও ইমরান নাজিরকে ব্যবধান গড়তে দেখা গেছে।
এই লড়াইয়ে দেশের ক্রিকেটাররা যে একেবারে ছিলেন না, তা নয়। ২০১৮ সালের ফাইনালে তামিম ইকবালের অনিন্দ্য সেঞ্চুরি সমর্থকদের চোখে লেগে থাকার কথা। ২০১৫ সালে অলক কাপালির পারফরম্যান্সও ভোলার মতো নয়। বিগত ৯ বিপিএল ফাইনালে রাজ করা বিদেশিদের ছাপিয়ে এবার কোনো দেশি ক্রিকেটারের উত্থান ঘটলেও ঘটতে পারে।
কবজির মোচড়ে খেলা শট দিয়ে হৃদয় জিতে নিতে পারেন তাওহিদ হৃদয়। লিটন কুমার দাসের ক্ল্যাসিক শট দেখে প্রাণ জুড়াতে পারে। আবার এই তরুণ তুর্কিতের ছাপিয়ে যেতে পারে অভিজ্ঞদের ব্যাট।
গত বিপিএল থেকেই দেশি ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স নজর কাড়া। নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, রনি তালুকদাররা বাজিমাত করেছিলেন ব্যাটে। সিলেটের শান্ত হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়। শান্তর ব্যাট এবার না হাসলেও কুমিল্লার হয়ে খেলা তাওহিদ হৃদয় জুড়ানো কিছু ইনিংস খেলেছেন। ঢাকার বিপক্ষে ঝোড়ো সেঞ্চুরি করা এ ব্যাটার প্রথম কোয়ালিফায়ারে ৬৪ রান করেন ক্ল্যাসিক সব শট খেলে। কুমিল্লার টপঅর্ডার এ ব্যাটারকেই যত ভয় বরিশালের বোলারদের।
লিটনের ধারাবাহিকতায় সমস্যা থাকলেও একবার ছন্দ পেলে ভয়ংকর ব্যাটার তিনি। তবে দেশি এ দুই তারকাকে ছাপিয়ে যেতে পারেন ইংল্যান্ডের মইন আলি বা আন্দ্রে রাসেল। অলরাউন্ডার কোটায় মইনের চেয়ে রাসেল এগিয়ে থাকবেন। সেরা হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থেকে কুমিল্লার ফাইনালের নায়ক হতে পারেন রাসেল।
কুমিল্লার তুলনায় বরিশালে অলরাউন্ডার কম। উইন্ডিজের কাইল মায়ার্স, মেহেদী হাসান মিরাজ ব্যাটিং-বোলিং দুটোই পারেন। কন্ডিশন বিবেচনায় মিরাজের চেয়ে পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে মায়ার্সকে এগিয়ে রাখতে হবে। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে দুর্দান্ত খেলা ক্যারিবীয় এ ক্রিকেটার হতে পারেন ফাইনালের নায়ক।
ডেভিড মিলার টি২০ ক্রিকেটের বড় নাম। যদিও গত দুই ম্যাচে চোখে পড়ার মতো কিছু করতে পারেননি। প্লে-অফের দুই ম্যাচ খেলে বিদায় নিতে চাওয়া মিলার শেষ পর্যন্ত থেকে গেছেন বরিশালের হয়ে ফাইনাল খেলতে। অধিনায়ক তামিম ইকবালের অনুরোধ, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক মিজানুর রহমান ও পুরো দলের অনুরোধ উপেক্ষা করতে পারেননি প্রোটিয়া এ ব্যাটার। হবু স্ত্রীর কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে দুই দিন বেশি থেকে ফাইনাল খেলবেন তিনি। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের নায়ক হতে পারেন তিনিও। বরিশালকে প্রথমবারের মতো উপহার দিতে পারেন বিপিএল শিরোপা।
অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবালকেও পিছিয়ে রাখা যাবে না। এই টুর্নামেন্টে দেশের এ তিন তারকা ক্রিকেটারই ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেছেন। দুই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় তামিম ফিরে যেতে পারেন ২০১৮ সালের ফাইনালের স্মৃতিতে।
তবে একক কৃতিত্বের চেয়ে সমন্বিত পারফরম্যান্সে সফল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। লিগ পর্বের শেষদিক থেকে দলগত পারফরম্যান্সেই বেশি সফল বরিশাল। রংপুরের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে মুশফিক ম্যাচসেরা হলেও মায়ার্স, সৌম্যর ছোট রানও ছিল গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যাক, কে হন আজকের ফাইনালের কাণ্ডারি।