মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সীমান্তচৌকির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লড়াই আবারও তীব্র হয়ে উঠেছে। তিন দিন গোলাগুলি বন্ধ থাকার পর গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত থেমে থেমে গোলাগুলি ও ভারী অস্ত্রের বিকট শব্দ শুনেছেন সীমান্তের বাসিন্দারা। এতে সীমান্তঘেঁষা লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘাতের আঁচ লেগেছে বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তে।
সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও টেকনাফ পৌরসভার বিপরীতে নাফ নদীর ওপারে বেশ কিছু সীমান্তচৌকি দখল নিয়েছে বিদ্রোহী আরকান আর্মি। এসব চৌকি পুনরুদ্ধার করতে জান্তা বাহিনী চেষ্টা চালাচ্ছে। এতে গত দুই দিন ধরে লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। ফলে ওপারের গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপের বিকট শব্দে মাঝে মধ্যে এপার কেঁপে উঠছে।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে রাখাইনের মংডু শহরের আশপাশে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হচ্ছে। মর্টার শেলের বিকট শব্দে আতঙ্ক বেড়েছে। সীমান্ত কাছাকাছি লোকজন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর আহমদ আনোয়ারী বলেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন দিন সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত ছিল। দুই দিন ধরে আবারও গোলাগুলি ও মর্টার শেলের বিকট শব্দে এপারে কেঁপে উঠছে।
একই পরিস্থিতির কথা জানিয়ে হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, সীমান্তে লড়াইয়ের তীব্রতা বেড়েছে। এতে এপারের লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, আবারও কিছু এলাকায় গোলাগুলি ও বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে বলে জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তের কাছাকাছি থাকা লোকজনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
২ বিজিবি টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর নজরদারিতে আছে বিজিবি।
এদিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্ত শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।