বাড়িতে চলছিল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার প্রস্তুতি। বরযাত্রীর লোকজন হাজির কনের বাড়িতে। এমন সময় বিয়ের আসরে উপস্থিত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। তিনি ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কনের বাবাকে ৫ হাজার ও বরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় ইউএনও ১৮ বছরের আগে মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা নেন বাবার কাছ থেকে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নের বৈদ্যনাথপুর পোস্ট অফিসপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, বৈদ্যনাথপুর পোস্ট অফিসপাড়া গ্রামের এক কৃষকের মেয়ে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল পাশের পশ্চিম রহিমাপুর গ্রামের মৃত দারাজ উদ্দিনের ছেলে নওয়াব আলীর (২০)। গতকাল রাত ১১টার দিকে বরযাত্রীও চলে আসে। এ সময় বাল্যবিবাহের খবর পান ইউএনও রুবেল রানা। এরপর বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে ইউএনও সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ওই ছাত্রীর বাবাকে ৫ হাজার টাকা ও বর নওয়াব আলীকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা নেওয়া হয়।
তারাগঞ্জের ইউএনও রুবেল রানা বলেন, ‘গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারি, বৈদ্যনাথপুর পোস্ট অফিসপাড়া গ্রামে নবম শ্রেণি পড়ুয়া এক ছাত্রীর বাল্যবিবাহের আয়োজন করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করি। বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ২০১৭-এর আওতায় মেয়ের বাবাকে ৫ হাজার ও বরকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন মর্মে মেয়ের মা-বাবা মুচলেকা দেন।’
কথা হলে মেয়ের বাবা বলেন, ‘ভুল বুঝে অল্প বয়সে মেয়েটার বিয়ে দিতে ধরছিলাম। ইউএনও সাহেব আমার চোখ খুলে দিয়েছেন। বুঝিয়েছেন, অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দিলে কী ক্ষতি হয়। তাই বিয়ে ভেঙে দিয়েছি। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে উপযুক্ত বয়সে বিয়ে দেব।’