Friday, October 18, 2024
spot_img
Homeঅর্থনীতিদুর্বল–সবল ব্যাংক একীভূত করতে নীতিমালা হচ্ছে: বাংলাদেশ ব্যাংক

দুর্বল–সবল ব্যাংক একীভূত করতে নীতিমালা হচ্ছে: বাংলাদেশ ব্যাংক

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী দুর্বল ও সবল ব্যাংক একীভূত হবে। এতে দুই ব্যাংকই শক্তিশালী হবে বলে মনে করে তারা। কাজেই একীভূত হওয়ার জন্য চলতি বছর পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে। এর মধ্যে যদি ব্যাংকগুলো স্বেচ্ছায় এ কাজ না করে তাহলে সামনের বছর কেন্দ্রীয় ব্যাংক চাপ দিয়ে একীভূতকরণে বাধ্য করবে।

ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভায় গতকাল কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনাই দেওয়া হয়েছে। সভায় উপস্থিত একাধিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তা বিষয়টি জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ‘একীভূত করা হবে ব্যাংক খাতের ভালোর জন্য। এ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উদাহরণ রয়েছে। সার্বিক বিষয়ে পর্যালোচনা করে আমরা একটি নীতিমালা তৈরি করব। তারপর করা হতে পারে।’

মেজবাউল হক আরও বলেন, ‘ব্যাংকগুলো যদি এখন ভালো অবস্থানে চলে যায় তাহলে একীভূত করার প্রয়োজন হবে না। ইতিমধ্যে দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করার জন্য পিসিএ নীতিমালা হয়েছে। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে আমরা দুর্বল ব্যাংক চিহ্নিত করতে পারব। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কোন কোন ব্যাংক একীভূত করার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা চাই মালিকেরা সিদ্ধান্ত নিক এ বিষয়ে। প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে আমরা সিদ্ধান্ত জানাব।’

তবে বৈঠক শেষে বিএবি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, ‘ব্যাংক একীভূত করা নিয়ে আমাদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার আমাদের প্রশ্নগুলোর উত্তর ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এতে ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে উদ্বেগ কেটে গেছে। আমরা এখন বুঝতে পেরেছি, ব্যাংক একীভূত হলে ক্ষতি হবে না।’

তবে নজরুল ইসলাম এ কথাও বলেন, ‘সরকার চাইলে জাতীয় স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্ত মানতে বাধ্য। তবে কোন প্রক্রিয়ায় ব্যাংক একীভূত হবে, সেটি স্পষ্ট নয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আসেনি। মালিকদের পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে একীভূত হবে, নাকি কেন্দ্রীয় ব্যাংক সিদ্ধান্ত দেবে—জানি না। আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়নি।’

জানা গেছে, ৮-১০টি দুর্বল ব্যাংককে ভালো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার পরামর্শ গভর্নরের। এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ব্যাংকার্স সভায়ও একই মতামত দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তখন ব্যাংকার্স সভায় গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেছিলেন, দেশের ৬১টি ব্যাংকের মধ্যে ৪০টির মতো ভালো অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ৮ থেকে ১০টি ব্যাংক একীভূত হতে পারে।

১ জুলাই থেকে ধারের সুবিধা সপ্তাহে এক দিন
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত বাস্তবায়নে নগদ অর্থের প্রবাহ কমাতে ব্যাংক ও নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে (এনবিএফআই) দৈনিক চাহিদা অনুযায়ী তারল্য সহায়তা দেওয়া থেকে সরে আসতে চাচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই নীতিগত সিদ্ধান্তের আলোকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত রীতি অনুযায়ী সপ্তাহের যেকোনো একদিন নিলামের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তারল্য সুবিধা দিতে নীতিমালা প্রণয়নে কাজ শুরু করেছে।

নতুন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য ব্যাংক ও এনবিএফআইয়ের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান কর্মকর্তাদের সঙ্গে গতকাল প্রথম বৈঠক হয়েছে। আর নতুন পদ্ধতি আগামী অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে চালু হচ্ছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে গতকাল ও বুধবারের যেকোনো একদিন নিলামের মাধ্যমে ধারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ মানি মার্কেট ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএমডিএ) সাধারণ সম্পাদক এবং যমুনা ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধান মো. মেহেদী হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা বৈঠকে মতামত দিয়েছি। এটা আইএমএফের শর্তের বাস্তবায়ন হলেও বাণিজ্যিক ব্যাংকের জন্য ভালো হবে। বারবার এর পেছনে সময় দিতে হবে না।’

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments