ভোট গণনা রাতে নাকি দিনে– এমন বিতর্কের জেরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের ভোট গণনা স্থগিত করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে দুই সম্পাদক প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় হট্টগোল ও হাতাহাতির পর এ সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন পরিচালনা-সংক্রান্ত উপকমিটি। অবশ্য ভোট গণনা নিয়ে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই উত্তেজনা দেখা দেয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ব্যালট পেপার ভর্তি পাঁচটি বাক্স হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
নির্বাচন পরিচালনা সংক্রান্ত উপ-কমিটির আহ্বায়ক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আবুল খায়ের সমকালকে বলেন, ‘ভোট গণনা শেষে ফলাফল দেওয়া হবে। এ বিষয়ে শনিবার আমরা (ইসি) বৈঠক করে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাব।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৫টায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়। এরপর বাছাই প্রক্রিয়া চলে রাত ৩টা পর্যন্ত। এরই মধ্যে কয়েক প্রার্থী ব্যালটের সঙ্গে মুড়ির মিল নেই জানিয়ে গণনায় আপত্তি তোলেন। সম্পাদক পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথী ও বিএনপি সমর্থিত নীল প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ কয়েকজন রীতি অনুযায়ী রাতেই গণনা করতে বলেন।
তবে এজেন্ট না থাকার কথা জানিয়ে সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হকসহ কয়েকজন শুক্রবার বাদ জুমা গণনার পক্ষে মত দেন। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ, হট্টগোল ও হাতাহাতি হয়। এতে এক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলসহ বেশ কয়েক আইনজীবী আহত হন। অনেকে সমিতি প্রাঙ্গণ ছেড়ে চলে যান। এরপর চাপের মুখে উপকমিটির আহ্বায়ক আবুল খায়ের স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদ সুলতানা যুথীকে সম্পাদক পদে বিজয়ী ঘোষণা করেন। কিন্তু এ সময় রীতি অনুযায়ী অন্য কোনো প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন না।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আবুল খায়ের বলেন, ‘আপনাদের বুঝতে হবে– কোন পরিস্থিতিতে আমি একজনকে বিজয়ী ঘোষণা করেছি! বয়স হয়েছে। ডায়াবেটিস, হৃদরোগসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছি।’ তবে বিজয়ী ঘোষণার বিষয়ে উপকমিটির সদস্য ইকবাল করিম বলেন, ‘এগুলো ফেসবুকের কথা। ব্যালট পুলিশ হেফাজতে।’
সাদা প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী শাহ মঞ্জুরুল হক সমকালকে বলেন, ‘উনি (আবুল খায়ের) মনে মনে সন্দেশ খাইলে তো হবে না। সবার সামনে ভোট গণনা করতে হবে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে শনিবার।’
নীল প্যানেলের সভাপতি প্রার্থী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমরা সব পদে বিপুল ভোট পেয়েছি। আওয়ামী প্যানেলের ভরাডুবি হয়েছে। এ জন্যই ভোট গণনা নিয়ে তারা ভয়ে আছে।’
এদিকে শুক্রবার এক বিবৃতিতে হামলার নিন্দা ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সভাপতি মো. ইয়াহিয়া ও সম্পাদক হাসান তারিক চৌধুরী।