ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
সোমবার ব্রাসেলসে এই বৈঠক পরিচালনা করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল। সেখানে ইউক্রেন যুদ্ধ, বেলারুশের পরিস্থিতি, মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের আগে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে একটি ভিডিও কনফারেন্স করেন তিনি।
তিনটি বিষয়ে সকলের মতৈক্য হয়েছে জানিয়ে জোসেপ বরেল বলেন, হামাসের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ওয়েস্ট ব্যাংক বা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের উপর আক্রমণ করেছে যে ইসরায়েলিরা, তাদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
পাশাপাশি ইউক্রেনের জন্য নতুন প্যাকেজ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই বৈঠকে।
ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে প্রথম পদক্ষেপ
বরেল জানিয়েছেন, এই প্রথম পশ্চিম উপকূলের ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল ইইউ। তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অন্যদিকে হামাসের বিরুদ্ধেও আরো নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বস্তুত, ইউরোপীয় ইউনিয়ন হামাসকে একটি সন্ত্রাসী বা জঙ্গি সংগঠন বলে মনে করে।
এর আগে পশ্চিম উপকূলের ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আলোচনায় ভেটো দিয়েছে হাঙ্গেরি। কিন্তু এদিন তারা সহমত হয়েছে বলে জানা গেছে। অ্যামেরিকা এবং যুক্তরাজ্যও ওই এলাকার ইসরায়েলিদের বিরুদ্ধে আগে ব্যবস্থা নিয়েছে। অভিযোগ, ওই ইসরায়েলিরা বেআইনিভাবে ওই অঞ্চলে গিয়ে বসবাস করছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তারা সেখানে যেতে পারে না। অন্যদিকে, তারা ওই এলাকার ফিলিস্তিনিদের উপরেও আক্রমণ চালিয়েছে। সে কারণেই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বৈঠকে জার্মানি অবশ্য একটি কথা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, হামাস এবং পশ্চিম উপকূলের কিছু ইসরায়েলির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা গ্রহণ করা হলেও তারা হামাস এবং ইসরায়েলিদের এক ব্র্যাকেটে ফেলছে না। হামাসকে তারা এখনো সন্ত্রাসী সংগঠন বলে মনে করে, শাস্তিপ্রাপ্ত ইসরায়েলিদের নয়।
ইউক্রেনের জন্য় সহায়তা
এদিন ইউক্রেনের জন্য পরবর্তী প্যাকেজ ঘোষণারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সামরিক এবং মানবিক সাহায্যের জন্য ৫ বিলিয়ন ইউরোর একটি প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে। নীতিগতভাবে সকলে এবিষয়ে সহমত হয়েছেন। এক্ষেত্রেও হাঙ্গেরি আগে ভেটো দিয়েছিল।
ভোট পরবর্তী রাশিয়ায় ৩০ জন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার কথাও বলা হয়েছে এদিনের বৈঠকে। নাভালনির মৃত্যুর সঙ্গেও এদের অনেকের যোগ আছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিন গাজার পরিস্থিতি এবং বেলারুশের পরিস্থিতি নিয়েও দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের।