ভারত মহাসাগরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়া এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজটির সঙ্গে মালিক পক্ষের যোগাযোগের বিষয়ে নতুন কোনো তথ্য নেই। দুদিন আগে দস্যুদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে মালিকপক্ষ। তবে কী কথা হয়েছে সে ব্যাপার বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
এদিকে বিবিসি সোমালির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সোমালিয়ার পুন্টল্যান্ড এলাকার নুগাল পুলিশ বিভাগের কমান্ডার মোহাম্মদ আলী আহমেদ মারদুফ জানিয়েছেন, জাহাজটি এখন জিফলের উপকূলীয় এলাকায় রয়েছে। তাঁরা জলদস্যুদের বিচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে পূর্ব দিকে একটি অভিযান চালাচ্ছেন। পূর্ব দিক থেকে যে কোনো ধরনের সহায়তা পাওয়ার পথ তাঁরা রুদ্ধ করেছেন।
মারদুফ বিবিসিকে বলেছেন, ‘আমরা এখন উপকূলে আছি। আমাদের পরিকল্পনা হলো জলদস্যুরা যেন নিজেদের সংগঠিত করতে না পারে এবং এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজে যারা (দস্যুরা) আছে, তারা উপকূল থেকে কোনো সাহায্য না পায়। সমুদ্রের দিকে তারা আন্তর্জাতিক বাহিনীর জাহাজ বেষ্টিত রয়েছে। ফলে তারা সব দিক থেকে বিচ্ছিন্ন।’
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, জাহাজে থাকা জলদস্যুদের কাছে এখন দুটি বিকল্প রয়েছে: হয় তাদের পুন্টল্যান্ড পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে, নয়তো আগের জাহাজের ভাগ্য বরণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে ভারতীয় নৌবাহিনী এমভি রুয়েন নামে একটি জাহাজ জলদস্যুদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছে এবং ৩৫ জলদস্যুকে আটক করে ভারতে নিয়ে এসেছে।
প্রায় এক দশক শান্ত থাকার পর এটি সোমালি জলদস্যুদের দ্বারা গত নভেম্বর থেকে ২০ টিরও বেশি জাহাজ ছিনতাই চেষ্টার সর্বশেষ শিকার হলো এমভি আব্দুল্লাহ।
বিবিসির প্রতিবেদনে অনির্ভরযোগ্য সূত্রে বলা হয়েছে, জলদস্যুরা জাহাজে ভারী অস্ত্র নিয়ে উঠেছে। তবে নুগাল পুলিশ প্রধান বিবিসিকে বলেছেন, জাহাজে এমন অস্ত্র রয়েছে এর কোনো প্রমাণ নেই।
নুগাল পুলিশ প্রধান বিবিসিকে আরও বলেন, জাহাজ ও এর ক্রুদের বাঁচাতে যে কোনো অভিযানে অংশ নিতে তাঁরা প্রস্তুত।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স পুন্টল্যান্ড পুলিশ সূত্রের বরাত দিয়ে বলেছে, পুলিশ বাহিনী একটি গাড়ি আটক করেছে, যেটি আব্দুল্লাহ জাহাজের ভেতরে অবস্থান করা দস্যু গ্রুপটির কাছে মালামাল পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রস্তুত ছিল।
ভারত মহাসাগর থেকে ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। জাহাজটি এখন সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জেফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল= ১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার) দূরে নোঙর করে রেখেছে দস্যুরা। জাহাজটি ছিনতাইয়ের ৯ দিনের মাথায় দস্যুরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
জিম্মি করার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে নজরে রাখে। তবে গত বৃহস্পতিবার রাতে সংস্থাটি এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এক পোস্টে জানায়, সোমালিয়া এলাকায় তারা যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করেছে।
ইইউ নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করলেও কোনো অভিযানের বিষয়ে জানায়নি। এর আগে তারা জাহাজটি উদ্ধারে অভিযানের কথা জানালেও বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সম্মতি দেওয়া হয়নি।