১৫ দিন হলো সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি ২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জিম্মি জাহাজ ও নাবিকদের উদ্ধারে এখনো কোনো দিক থেকেই বিশ্বাসযোগ্য কোনো বার্তা আসেনি বলে জানিয়েছে জাহাজের মালিকপক্ষ। সংকট উত্তরণে জলদস্যুদের সঙ্গে তাদের কার্যকর কোনো আলাপ এখনো হয়নি।
তবে, নাবিকেরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করতে পারছেন বলে জানিয়েছেন কেএসআরএম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম।
সংশ্লিষ্ট নাবিকদের পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘গত ২০ মার্চ জলদস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ হওয়ার পর তাঁদের সঙ্গে আর কোনো আলাপ হয়নি। তবে নাবিকেরা যে তাঁদের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করছেন, তা আমরা তাঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি।’
নাবিকেরা সুস্থ ও নিরাপদে আছেন উল্লেখ করে মেহেরুল করিম বলেন, ‘আমরাও প্রতিদিন নাবিকদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করছি। আপাতত এটুকুই। বাড়তি আর কোনো খবর নেই, এখনো নেই।’
বিবিসি সোমালি গণমাধ্যম থেকে গত ২৩ মার্চে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সোমালি পান্টল্যান্ড পুলিশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) ও ভারতীয় নৌবাহিনী কমান্ডো হেলিকপ্টার ও যুদ্ধজাহাজসহ আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটিকে কড়া নজরদারিতে রেখেছে। আর এ কারণে বেশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে জলদস্যুরা।
সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, সোমালি জলদস্যুরা জাহাজ মালিকপক্ষের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগ করেছিল গত ২০ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে। তা-ও তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে। এরপর সেই আলাপ-আলোচনার পারদ আর ওপরে ওঠেনি। এরপর গত ছয় দিন ধরে আর কোনো আলাপ-আলোচনা হয়নি দুপক্ষের মধ্যে।
অন্যদিকে গত ১৬ মার্চ রাত ৮টায় ওই জাহাজের এক নাবিকের সঙ্গে মালিকপক্ষের সরাসরি আলাপ হয়। এর আগে ১৪ মার্চ রাত ৮টার দিকে সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল সমান ১ দশমিক ৮৫২ কিলোমিটার) দূরে দস্যুরা ছিনতাইয়ের পর প্রথম জাহাজটি নোঙর করেছিল। পরে ১৫ মার্চ সেখান থেকে গ্যারাকাদ উপকূল থেকে ৪৫ থেকে ৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তর দিকে নিজেদের নিরাপদ স্থানে অবস্থান নেয়। উপকূলবর্তী গদবজিরান নামক স্থান থেকে মাত্র চার নটিক্যাল মাইল দূরে বর্তমানে জাহাজটির সর্বশেষ অবস্থান।
প্রসঙ্গত, ৫০ হাজার মেট্রিকটন কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গত ১২ মার্চ সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ।