বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে তিনি এ প্রশংসা করেন বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন গিয়ে এই বৈঠক করেন ভুটানের রাজা। বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভুটানের রাজা শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে এলে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন তাকে হাসপাতালের সেবা কার্যক্রম ঘুরিয়ে দেখান।
পরিদর্শন শেষে ভুটানের রাজা বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠক করেন। বৈঠকে বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবার ভূয়সী প্রশংসা করেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক।
ভুটানের রাজা সে দেশে বাংলাদেশের আদলে একটি অত্যাধুনিক বার্ন হাসপাতাল নির্মাণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করলে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সব ধরনের সহায়তা করার আশ্বাস দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ শেষে ভুটান সরকার কর্তৃক প্রথম বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করায় ভুটানের রাজার প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
বৈঠকে ভুটানের চিকিৎসকদের বাংলাদেশে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে রাজার নিকট থেকে প্রস্তাব দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভুটানের চিকিৎসকদের বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখান।
পরিদর্শনকালে ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েনসিলসহ ভুটানের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাজার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে আসেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ এবং তার নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল।
পরিদর্শনের আগে সায়মা ওয়াজেদের নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি দল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটু মিয়াসহ অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এসময় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশে প্রতিনিধি বর্ধন জং রানা, সৈয়দ মাহফুজুল হক, ড. কামরুজ্জামানসহ অন্য কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ক্রমবর্ধমান উন্নয়নশীল ও জনবসতিপূর্ণ একটি দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সহোযোগিতার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক সায়মা ওয়াজেদ ও অন্য প্রতিনিধিদের বিশেষ ধন্যবাদ জানান ডা. সামন্ত লাল সেন।
আলাপকালে বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন, বার্ন ইনস্টিটিউটের সেবা ঢাকার বাইরে বাড়ানো এবং বাংলাদেশের এই বার্ন চিকিৎসার ধারণা ভুটানসহ অন্য সহযোগী দেশে কীভাবে ছড়িয়ে দেওয়া যায় সে ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ও প্রতিনিধি হিসেবে সায়মা ওয়াজেদ বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। এছাড়া বাংলাদেশে ভ্যাক্সিন প্লান্ট নির্মাণ কাজে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সার্বিক সহায়তার কথাও জানান সায়মা ওয়াজেদ।