রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির সওগাত নিয়ে এসেছিল মাহে রমজান। রমজানের সিয়াম সাধনা মুসলিম উম্মাহকে পাপাচার, কামাচার ও মিথ্যাচার থেকে বিরত রাখার যে প্রশিক্ষণ দেয়, তা পরবর্তী ১১ মাস জীবনের সব ক্ষেত্রে মেনে চলার মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায়।
মাহে রমজানের শেষ মুহূর্তে আমাদের উপলব্ধি করা উচিত—মাহে রমজানে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে সততা, ন্যায়পরায়ণতা, আমানতদারি, বিশ্বস্ততা, পরোপকার, সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সংযম ও ধৈর্যের গুণ অর্জন এবং সব ধরনের মন্দ ও অশ্লীল কাজ, পাপাচার, সুদ, ঘুষ, জুলুম ও দুর্নীতি এবং যাবতীয় অনৈসলামিক কাজ থেকে বিরত থাকার যে প্রশিক্ষণ আমরা পেলাম—তা কাজে লাগিয়ে বাকি জীবনে যদি মেনে চলতে পারি, তাহলে রমজান মাসের আগমন আমাদের জন্য সার্থক।
মহানবী (সা.) এরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখল আর মিথ্যা কথা ও খারাপ কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখতে পারল না, আল্লাহ তাআলার কাছে তার না খেয়ে থাকার প্রয়োজন নেই। (বুখারি)
মাহে রমজান আমাদের সাম্য, মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব, সহানুভূতি, শৃঙ্খলা, একনিষ্ঠতা, নিয়মানুবর্তিতা ইত্যাদি মানবীয় মূল্যবোধ শেখায়। ধনী-দরিদ্র যে একই ভ্রাতৃত্বের অন্তর্গত এবং একের প্রতি অন্যের দায়িত্ব যে কত বড়, তা আমরা রমজান মাসে অনুভব করতে পারি। ক্ষুধার মাধ্যমে দারিদ্র্যক্লিষ্ট মানুষের নিত্যদিনের ক্ষুধার কষ্ট আমরা এই রমজান মাসেই বেশি উপলব্ধি করতে পারি।
প্রকৃতপক্ষে মাহে রমজান আমাদের ব্যক্তিজীবন থেকে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন পর্যন্ত সর্বস্তরে মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ পালনের দীক্ষা দিয়ে যায়। সুতরাং মাহে রমজানের রোজা পালনের মাধ্যমে যে উপলব্ধি আমাদের হয়েছে—তা জীবনের সব পর্যায়ে মেনে চলা উচিত।
ড. মো. শাহজাহান কবীর, বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি