মাঠে পা রাখতেই অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর অভিনন্দনবার্তা সবার আগে পৌঁছে গেল সাকিব আল হাসানের কাছে। কাল মুহূর্তেই তিনি হয়ে গেলেন দলের মধ্যমণি। একটু বিশেষ ছিল নতুন পেস বোলিং কোচ আন্দ্রে অ্যাডামসের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ, যাঁর সঙ্গে এক যুগ আগে বিপিএলে খেলেছিলেন একই দলের হয়ে।
মাঠে নেমেই শান্তর সঙ্গে সাকিবের রসিকতা। সিরিজের প্রথম টেস্টে অধিনায়ক শান্ত আউট হওয়ার পর যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন, তারকা অলরাউন্ডার সেটিই নকল করে দেখালেন। সেটি দেখে হেসেই বাঁচেন না পাশে থাকা শরীফুল ইসলাম। সাকিব ফিরতেই যেন সজীব হয়ে উঠল পুরো দল। তাদের লক্ষ্য এবার চট্টগ্রামে সিরিজটা বাঁচানো।
সাকিব গতকাল সকালে চট্টগ্রামের বিমান ধরার আগে সিরিজ বাঁচানোর লক্ষ্যের কথা ঢাকায় সংবাদমাধ্যমকে বলেই গেছেন, ‘সব সময় আশা করি, জিতব। আমি মনে করি, আমাদের শ্রীলঙ্কার সঙ্গে অনেক ভালো করা উচিত এবং পরের টেস্ট (চট্টগ্রাম) জেতা উচিত।’
চট্টগ্রাম টেস্টেও কঠিন লড়াই অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের সামনে। সিলেট টেস্টে পেস-সহায়ক উইকেট তৈরি করে সেই ফাঁদে পড়েছিল স্বাগতিকেরাই। লঙ্কান পেস বোলাররা নিয়েছেন বাংলাদেশের সব কটি (২০) উইকেট। দ্বিতীয় টেস্টে তাই একই ধরনের উইকেটে খেলার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
দলের সেরা পেসার শরীফুল ইসলাম লাল বলে একদমই ছন্দে নেই। খালেদ আহমেদও ধারাবাহিক নন, নাহিদ রানা অনভিজ্ঞ, অভিষেকের অপেক্ষায় হাসান মাহমুদ। ইতিমধ্যে লঙ্কানদের পেস বোলিংয়ের দাপট দেখেছে স্বাগতিকেরা। আর দলে সাকিব যোগ দেওয়ার পর বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ হয়েছে শক্তিশালী। ৬৬ টেস্ট খেলা সাকিব, ৪৫ টেস্ট খেলেছেন তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজের আছে ৪২ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা। তাঁদের সঙ্গে ‘লোকাল হিরো’ নাইম হাসানও আছেন দলে। বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ এখন এতটাই শক্তিশালী, চট্টগ্রামের উইকেটে এবার তাই প্রথাগত রানবন্যা না-ও দেখা যেতে পারে। কয়েক সেশন শেষেই দেখা যেতে পারে ভালো টার্ন।
এই টেস্টে স্পিন আক্রমণে অভিজ্ঞতায় লঙ্কানরা কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও বাঁহাতি স্পিনার প্রবাত জয়াসুরিয়াকে সামলাতে হিমশিম খেতে হয় যেকোনো ব্যাটিং অর্ডারের। ১১ টেস্ট খেলা প্রবাতের নামের পাশে ৬৭ উইকেটই বলছে কতটা ছন্দে রয়েছেন তিনি। তাঁর সঙ্গে জুটি বেঁধে ১৪ টেস্ট খেলা রমেশ মেন্ডিসও দারুণ কার্যকর, নিয়েছেন ৬৩ উইকেট। তাঁদের সঙ্গে অভিষেকের অপেক্ষায় নিশান পেইরিসের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ার বেশ উজ্জ্বল।
দ্বিতীয় টেস্টের লড়াইটা যে ‘ব্যাটল অব স্পিন’ হতে পারে, সেটির ইঙ্গিত এরই মধ্যে মিলেছে। তবে গতকাল সন্ধ্যায় তুমুল বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে। তবু এবার এমন উইকেট তৈরি হচ্ছে, সম্প্রতি এ ধরনের পিচে খেলেনি বাংলাদেশ। উইকেটে হালকা ঘাস থাকলেও যতটা স্পিন-সহায়ক রাখা যায়, সেই চেষ্টাই করা হচ্ছে।