কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সদ্য বদলীকৃত ডা. শরীফ উর রহমানের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ থাকায় শরিয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে রৌমারীতে বদলি দেখানোর প্রতিবাদের এ মানববন্ধন করে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রৌমারী-ঢাকা মহাসড়কের উপজেলা গেটের সামনে স্থানীয়রা এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার শামসুল আলম, আজিজুর রহমান, বাসদ নেতা (মার্কসবাদী) মহিউদ্দিন মহির, প্রভাষক এম আর ফেরদৌস, আব্দুস সামাদ, আক্তারুজামান আক্তার ও শৌলমারী ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও মনফ বিদ্যুৎ সরকার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, অমানবিক ডা. শরীফ উর রহমানকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চান না তারা। দ্রুত ওই ডা.কে অপসারণসহ পর্যাপ্ত জনবল চান রৌমারীবাসী।
এর আগে গত ১৩ মার্চ দুপুরে শরীয়তপুর পৌরসভার চরপালং গ্রামের রাজিব শেখ ও রুবিনা বেগম দম্পত্তির তিন মাসের শিশু মুসাফিরকে ঠান্ডা ও পেট ব্যথার কারণে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগে ভর্তি করা হয়। ওইদিন সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করেই মুসাফির অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে তার স্বজনদের ডাকে নার্সরা আসেন। পরে তারা ডা.কে ডাকার পরামর্শ দেন। এসময় নার্সের পরামর্শ অনুযায়ী রোগীর স্বজনরা একাধিকবার ডাকলেও আসেননি দায়িত্বরত ডা. শরীফ উর রহমান। এদিকে রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নার্স, ওয়ার্ডবয় ও আয়া ডেকে আনতে যান ওই ডা.কে। কিন্তু ডা. নার্সকে পরামর্শ দেন অক্সিজেন খুলে তার কাছে নিয়ে যেতে। রোগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় নার্স অক্সিজেন খুলতে অপারগতা প্রকাশ করলেও শিশু মুসাফিরকে শেষ পর্যন্ত দেখতে যাননি ডা. শরীফ উর রহমান। এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে হাসপাতালেই মারা যায় শিশু মুসাফির। এ ঘটনায় ১৪ মার্চ গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. হোসনে আরাকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিবুর রহমান। পরে ২০ মার্চ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. হারুন অর রশীদ স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ডা. শরীফ উর রহমানকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বদলি করা হয়।
রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, ডা. শরীফ উর রহমানের বদলি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হলেও এখনও তিনি যোগদান করেননি।