ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মধ্যে যা একটু লড়াই হয়েছে। এশিয়ার দুই দলের টেস্ট সিরিজে পুরো উল্টো চিত্র। বিন্দুমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। একপেশে লড়াইয়ে বাংলাদেশ টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হয়েছে। ক্রিকেটের রাজকীয় সংস্করণে এমন ভরাডুবি নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পর্যালোচনা করবে।
বোলিং-ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশের ব্যর্থতা তো ছিলই। স্বাগতিক দলের ব্যাটিং লাইনআপ রীতিমতো মুখ থুবড়ে পড়েছে। সিলেট ও চট্টগ্রামে ৩২৮ ও ১৯২ রানের পরাজয় দুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছে বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ের চিত্র। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত চার ইনিংসে ৮ গড়ে করেন ৩২ রান। সর্বোচ্চ ২০ পেরোনো ইনিংসটি ছিল চট্টগ্রামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে। লিটন দাস দলের বিপদের মুহূর্তে বাজে শট খেলে আউট হয়েছেন। সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন। মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ—টেস্টে সিরিজের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকায় আছেন এই দুই বাংলাদেশি। তাদের ইনিংসগুলো শুধু বাংলাদেশের হারের ব্যবধান কমাতে পেরেছে।
লঙ্কানদের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্ট চলার সময়ই মুমিনুল বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। হারের পর শান্ত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বেশি ম্যাচ খেলার দিকে জোর দিয়েছেন। ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে কথা প্রসঙ্গে মিরপুরে আজ গণমাধ্যমকে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমাদের যে সম্পদ আছে, তাদের নিয়েই তো খেলতে হবে। এর বাইরে আপনি কীভাবে যাবেন। আমাদের খেলোয়াড় তারাই খেলছে এখানে। হ্যাঁ জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে বাকিদের একটা তফাত থাকে। ঈদের পর নির্বাচক, কয়েকজন খেলোয়াড়, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ—আমরা সবাই বসব। আমরা রিভিউ করব।’
সিলেটে প্রথম টেস্টে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, কামিন্দু মেন্ডিস দুই ব্যাটার দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করেছেন। লঙ্কান দুই ব্যাটারের ব্যাট থেকে এসেছে ৪৮৬ রান। বাংলাদেশ দল সিলেটে দুই ইনিংস মিলে করে ৩৭০ রান। সেই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে শ্রীলঙ্কা করে ৪১৮ রান। চট্টগ্রামে লঙ্কানরা প্রথম ইনিংসে লঙ্কানরা করে ৫৩১ রানের পাহাড়। সেখানে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ১৭৮ রানে গুটিয়ে গেছে। বাংলাদেশ-লঙ্কানদের ব্যাটিংয়ে এমন আকাশ-পাতাল তফাৎ দেখে জালাল বলেন, ‘আসলে ম্যাচ তো হারতেই পারে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, যদি তারা ৫০০ রান করতে পারে, তাহলে আমরা ৪৫০ করতে পারলাম না কেন? ৪০০+ করা গেল না কেন? এখানে বড় একটা আক্ষেপ আছে। ঘরের মাঠ। দুইটা ভালো উইকেটে খেলেছি। আমরা চট্টগ্রাম এবং সিলেট নিয়েছিলাম ব্যাটারদের সুযোগ দেওয়ার জন্য যাতে ব্যাটাররা রান করতে পারে।’