চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেছেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব কনভেনশন হলে বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য দেশের প্রান্তিক অঞ্চল পর্যন্ত চিকিৎসা পৌঁছে দিতে হবে। চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা যদি ঠিকভাবে কাজ করে তাহলেই তা সম্ভব। আমি এজন্য আপনাদের যত রকম সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করবো। আপনারা আমাকে সেবা দিন, আমি প্রয়োজনীয় সব কিছুর ব্যবস্থা করবো।
এ সময় স্বাধীনতার পরপরই দেশের স্বাস্থ্যখাতে নেওয়া বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ তুলে ধরে ডা. সামন্ত লাল সেন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য পূরণে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
আলোচনায় অংশ নিয়ে অন্য বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতেই বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়েছিল। তিনি স্বাস্থ্য ও পুষ্টি সেবা পাওয়াকে জনগণের মৌলিক অধিকার এবং রাষ্ট্রের কর্তব্য হিসেবে সংবিধানে সংযোজনের পাশাপাশি প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব প্রদান করেন। চিকিৎসা সেবাকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য জেলা, থানা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতে ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। যার ফলে গত ১৫ বছরে শিশু ও মাতৃমৃত্যু হার হ্রাস, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার হ্রাস, গড় আয় বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সূচকে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।
স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়ন তুলে ধরে আলোচকরা বলেন, ইপিআই কর্মসূচির আওতায় শিশু, কিশোরী ও নারীদের ১১টি মারাত্মক রোগের বিরুদ্ধে বিনামূল্যে টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। যা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত। অতিসম্প্রতি জরায়ুমুখ ক্যানসার প্রতিরোধে ১০-১৪ বছর বয়সী কিশোরীদের বিনামূল্যে এইচপিভি টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। সরকারের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে করোনা মহামারিতে মৃত্যু যে কোন দেশের চেয়ে অনেক কম ছিল। এটি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৯৪ শতাংশ মানুষকে বিনামূল্যে টিকা প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ২০১৪ সালে পোলিও মুক্ত ঘোষণা এবং ২০২৩ সালে কালাজ্বর ও ফাইলেরিয়াসিস নির্মূলের স্বীকৃতি আমাদের স্বাস্থ্য খাতের অনন্য অর্জন উল্লেখ করে যক্ষ্মা ও এইচআইভি-এইডস নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্যের কর্তা ব্যক্তিরা।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন— স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণায়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. মো. জিয়াউদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফয়রের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সাহান আরা বানু, বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. দীন মোহাম্মদ নূরুল হক, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি ডা. মো. জামাল উদ্দিন চৌধুরী প্রমুখ।