Thursday, September 19, 2024
spot_img
Homeখেলাধুলাদক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন ভেঙে টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত

দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন ভেঙে টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত

শেষ ওভারে দরকার ১৬ রান। রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনালে টানটান উত্তেজনা। কে হাসবে শেষ হাসি-দক্ষিণ আফ্রিকা নাকি ভারত? বোঝা যাচ্ছিল না তখনও।

শেষ ওভারে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে বল তুলে দিলেন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা। প্রথম বলেই ওয়াইড ফুলটস, সজোরে হাঁকালেন ডেভিড মিলার।

ছক্কা হতেই যাচ্ছিল, দৌড়ে এসে লংঅফ বাউন্ডারিতে বল তালুবন্দি করলেও রাখতে পারেননি সূর্যকুমার। বুদ্ধি করে সেটি ভাসিয়ে দিলেন বাতাসে। পরের চেষ্টায় ভেতরে ঢুকে নিয়ে নিলেন অসাধারণ ক্যাচ। ওই এক ক্যাচেই যেন সব শেষ দক্ষিণ আফ্রিকার।

পরের ৫ বলে আর ১৬ রান নিতে পারেননি লোয়ার অর্ডারের কাগিসো রাবাদা-কেশভ মহারাজরা। রুদ্ধশ্বাস এক ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টির বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত। ২০০৭ সালে প্রথম আসরেই শিরোপা জিতেছিল তারা।

দক্ষিণ আফ্রিকার সামনে লক্ষ্য ছিল ১৭৭ রানের। জাসপ্রিত বুমরাহ-অর্শদীপ সিংয়ের দুর্দান্ত পেসে ১২ রানের মধ্যে রিজা হেনড্রিকস (৪) আর এইডেন মার্করামকে (৪) হারিয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা। এরপর ২১ বলে ৩১ করে দিয়ে যান ত্রিস্তান স্টাবস। কুইন্টন ডি কক করেন ৩১ বলে ৩৯।

১৩তম ওভারে ১০৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বেশ বিপদেই পড়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেখান থেকে ডেভিড মিলার আর হেনরিখ ক্লাসেনের ২২ বলে ৪৫ রানের জুটি। সেই জুটিতে ম্যাচ অনেকটাই হাতে চলে এসেছিল প্রোটিয়াদের। ২৪ বলে দরকার ছিল ২৬।

কিন্তু বিধ্বংসী হাফসেঞ্চুরি করা ক্লাসেনকে উইকেটরক্ষকের ক্যাচ বানিয়ে হার্দিক পান্ডিয়া ফেরানোর পরই যেন ম্যাচ ঘুরে যায়। ২৭ বলে ২ চার আর ৫ ছক্কায় ৫২ করেন ক্লাসেন। শেষ ভরসা হয়ে ছিলেন কেবল ডেভিড মিলার। তিনিও শেষ করতে পারলেন না। ১৭ বলে ২১ করে ফিরতে হলো দুর্দান্ত এক ক্যাচ হয়ে। ৮ উইকেটে ১৬৯ রানে এসে থামলো দক্ষিণ আফ্রিকা।

ভারতের হার্দিক পান্ডিয়া ২০ রানে নিলেন ৩টি উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার জাসপ্রিত বুমরাহ আর অর্শদীপ সিংয়ের।

এর আগে সময়মতো এসে জ্বলে উঠলো বিরাট কোহলির ব্যাট। আগের ৭ ম্যাচে যার ব্যাট থেকে এসেছিলো সব মিলিয়ে ৭৫ রান, আজ ফাইনালে এসে এক ম্যাচেই তিনি করে দিলেন ৭৬ রান।

রোহিত শর্মা, সূর্যকুমার যাদবরা পুরো বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে এলেও ফাইনালে এসে ব্যর্থ হলেন; কিন্তু একপ্রান্তে বিরাট কোহলি জ্বলে উঠে ভারতকে তুলে দিলেন ৭ উইকেটে ১৭৬ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ। ৫৯ বলে ২ ছক্কা এবং ৬ বাউন্ডারিতে ৭৬ রান করেন কোহলি।

বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। ব্যাট করতে নামা ভারতকে শুরুতে চেপে ধরে দক্ষিণ আফ্রিকান বোলাররা। বিশেষ করে কেশভ মহারাজ। বল করতে এসেই দুই উইকেট তুলে নেন তিনি। ফিরিয়ে দেন রোহিত শর্মা এবং রিশাভ পান্তকে।

প্রথম ওভারে মার্কো জানসেনকে পরপর দুটি এবং মোট তিনটি বাউন্ডারি মারেন বিরাট কোহলি। দ্বিতীয় ওভার করতে আসেন কেশভ মহারাজ। এসেই পরপর দুটি বাউন্ডারি হজম করেন রোহিত শর্মার কাছ থেকে। তৃতীয় বল ডট এবং চতুর্থ বলেই হেনরিক ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ দেন রোহিত শর্মা।

৫ বলে ৯ রান করে বিদায় নিলেন পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত খেলা রোহিত শর্মা। ব্যাট করতে নামেন রিশাভ পান্ত। একই ওভারের শেষ বলে মাহারাজের বল বুঝতেই পারেননি পান্ত। ব্যাটের উপরের অংশে লেগে বল উঠে যায়। অনায়াসেই ক্যাচটা ধরে নেন কুইন্টন ডি কক। ২৩ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট।

৩৪ রানের মাথায় কাগিসো রাবাদার বলে ছক্কা মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে হেনরিক ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সূর্যকুমার যাদবও। ৪ বলে ৩ রান করেন তিনি।

সূর্যকুমার আউট হওয়ার পর বিরাট কোহলির সঙ্গে জুটি বাঁধেন অক্ষর প্যাটেল। দু’জন মিলে ৭২ রানের জুটি গড়ে ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয় সামাল দেন। ৩১ বলে ৪৭ রান করে রানআউট হন অক্ষর প্যাটেল। শিবাম দুবে করেন ১৬ বলে ২৭ রান। হার্দিক পান্ডিয়া ৫ রানে অপরাজিত থাকেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার কেশভ মহারাজ আর অ্যানরিখ নরকিয়া নেন দুটি করে উইকেট।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments