ফ্রান্সে আগাম পার্লামেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ রোববার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি ভোট পড়েছে বলে দেশটির দায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্র দাবি করেছে।
এ বিষয়ে বিবিসির একটি ধারাবাহিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভোটের দিনটিতে মধ্যাহ্ন পর্যন্ত দেশজুড়ে মোট ভোটারের অন্তত ২৬ শতাংশ কাস্ট হয়েছে। ভোট প্রদানের এই হার গত ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বলে জানা গেছে। দেশটির গত নির্বাচন অর্থাৎ ২০২২ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল সেটিতে অনেক কম ভোট পড়েছিল। তবে ভোট না দেওয়ার এই প্রবণতা থেকে এবার বেরিয়ে এসেছে ফরাসিরা। ২০২২ সালের নির্বাচনে মধ্যাহ্ন পর্যন্ত ১৮.৪৩ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছিল।
এবারের ভোট প্রদানের হার নিয়ে ইপসোস পোলিং ইনস্টিটিউটের গবেষণা পরিচালক ম্যাথিউ গ্যালার্ড বলেছেন, ‘১৯৮১ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনের পর এটাই সর্বোচ্চ ভোটের হার।’
ভোটের হারে সবচেয়ে বড় চমক ছিল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। ২০২২ সালের নির্বাচনে মধ্যাহ্ন পর্যন্ত প্যারিসে ভোট পড়েছিল মাত্র ১২.৮ শতাংশ। এবার গণমাধ্যমগুলোর ভবিষ্যদ্বাণীকে ভুল প্রমাণিত করে মধ্যাহ্ন পর্যন্ত সেখানে ভোট পড়েছে ২৫.৪৮ শতাংশ।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভোটদানের এমন হার ফ্রান্সের কট্টর ডানপন্থী বিকল্প শক্তির উত্থান ঘটাতে পারে। বিভিন্ন জরিপেও এমন আভাস পাওয়া গেছে। প্রায় সবগুলো জরিপই বলছে, এবার মেরিন লে পেনের নেতৃত্বাধীন কট্টর ডানপন্থী দল আরএন প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসতে যাচ্ছে।
জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় ইমানুয়েল মাখোঁ সরকারের প্রতি ফ্রান্সের জনগণের অসন্তোষ বেড়েছে। প্রেসিডেন্ট মাখোঁ মূল্যস্ফীতি কমানোর আশ্বাস দিলেও অভিবাসনবিরোধী এবং কট্টর ডানপন্থী আরএন দলের প্রতিই সাধারণ মানুষের সমর্থন বাড়তে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, ফ্রান্সের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদে ৫৭৭টি আসন আছে। রোববার প্রথম দফার ভোটের পর আগামী ৭ জুলাই দ্বিতীয় ও শেষ ধাপের ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন জনমত জরিপে দেখা গেছে, জাতীয় পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেতে যাচ্ছে এবার আরএন। তবে দলটি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি-না, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। নির্বাচনে ইমানুয়েল মাখোঁর মধ্যপন্থী দল তৃতীয় স্থানে থাকবে বলেও আভাস পাওয়া গেছে জরিপগুলোতে।
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নির্বাচনে খারাপ ফলের জেরে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন মাখোঁ। একই সঙ্গে দেশটিতে আগাম নির্বাচনের ঘোষণাও দেন তিনি। নির্বাচনের প্রসঙ্গে মাখোঁ বলেছেন, যে দলই জিতুক, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করবেন। দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২৭ সাল পর্যন্ত সরকার পরিচালনার মেয়াদ আছে মাখোঁর।