Thursday, September 19, 2024
spot_img
Homeজাতীয়প্রত্যয় স্কিম বাতিলে শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক

প্রত্যয় স্কিম বাতিলে শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক

সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন অযৌক্তিক বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, প্রত্যয় স্কিম নিয়ে শিক্ষকদের আন্দোলনের কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না।

মঙ্গলবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে অর্থমন্ত্রীর অফিস কক্ষে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) দক্ষিণ, মধ্য ও পশ্চিম এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট ইয়াংমিং ইয়ংয়ের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রত্যাশার চেয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক বেশি সহায়তা করছে।

এদিকে সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়, অধিভুক্ত-উপাদানকল্প ১৯৮ কলেজের শিক্ষার্থী ও সেবাপ্রার্থীরা। এমন পরিস্থিতিতে অন্তত মার্কশিট, সনদ, ট্রান্সক্রিপ্ট শাখা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিও বন্ধ রয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল নয়টায় প্রশাসনিক ভবনের প্রবেশপথে জড়ো হয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন শুরু করেন। এরপর তারা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন প্রশাসনিক ভবনের সামনে।

এ সময় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও ঢাবি অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল মোতালেব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেওয়া ১৯৭৩ সালের আদেশে চলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পেনশন কাঠামো রয়েছে। এখানে পরিবর্তন আনতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সিন্ডিকেটে পাস হতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের ওপর এ পেনশন স্কিম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা আমাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ। অবিলম্বে এই পেনশন স্কিম প্রত্যাহার করতে হবে। আমাদের দাবি মানলে আমরা এখনই কর্মবিরতি পালন করে কর্মস্থলে ফিরব।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো প্রশাসনিক ভবন প্রায় ফাঁকা। কিছু কক্ষে তালা দেওয়া। কিছু খোলা থাকলেও কোনো সেবা দেওয়া হচ্ছে না। এতে ফিরে যাচ্ছেন সেবাপ্রার্থীরা। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগ-ইনস্টিটিউটও বন্ধ পাওয়া গেছে। কোনো শিক্ষক-কর্মচারীকে সেখানে দেখা যায়নি।

এর আগে গত রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

মেহেদী হাসান বাপ্পি নামে ঢাকা কলেজের এক ছাত্র বলেন, ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের জন্য এসেছি। আমাদের ফরম ফিলআপের ডেট শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্ত এসে দেখি তালা মারা সবরুমে। কী যে পরিস্থিতি। বৃষ্টির মধ্যে মিরপুর ১৪ থেকে এসেছি। কবে যে করতে পারব তারও কোনো ঠিক নেই।

আসলাম হোসেন নামে আরেক সেবাপ্রার্থী বলেন, আজকেসহ তিনদিন এসে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি, তবুও সনদ তুলতে পারিনি। আমার ৪ জুলাই ভাইভা রয়েছে চাকরির, আমার সনদ খুবই প্রয়োজন। খুব বিপদে আছি।

এ দিকে সর্বাত্মক কর্মবিরতি দিয়ে কলাভবনের মূল ফটকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।

এর আগে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে সর্বাত্মক কর্মবিরতির ঘোষণা দেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া। তাদের দাবিগুলো হলো, ‘প্রত্যয়’ স্কিমের প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার, সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তন।

তবে এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক নিজামুল হক ভূইয়া।  তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকরা স্বতঃস্ফুর্তভাবে কর্মবিরতি পালন করেছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত সর্বাত্মক কর্মবিরতি চলবে।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments