সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর পরিকল্পনা সরকারের নেই উল্লেখ করে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হেসেন বলেছেন, চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদে বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে ৩০ বছরের কম বয়সী প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে পিরোজপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শামীম শাহনেওয়াজের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী এ কথা বলেন।
স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেশনজট নেই উল্লেখ করে জনপ্রশাসনমন্ত্রী বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য কোনো সেশনজট নেই বললেই চলে। শিক্ষার্থীরা ১৬ বছরে এসএসসিসহ ২৩-২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকে।
তিনি বলেন, চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর হওয়ার ফলে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য কমপক্ষে ৬-৭ বছর সময় পেয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২-১ বছর লেগে যায়। ফলে চাকরিতে যোগদানের জন্য ন্যূনতম বয়স ৩০ বছর থেকে ৩৫ বছর করার যে দাবি করা হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে তার কাছাকাছি পর্যায়ে উপনীত হয়।
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের রিপোর্টের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষায় বিভিন্ন স্তরে উত্তীর্ণ প্রার্থীগণের বয়স ও জেন্ডারভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী কম বয়সী (২৩-২৫) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সব থেকে বেশি (৩৭.৬৮%) এবং বেশি বয়সী (২৯–এর ঊর্ধ্বে) সুপারিশকৃত প্রার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে কম ১.৭১%)।
মন্ত্রী জানান, চাকরি থেকে অবসরের বয়সসীমা ৫৭ থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ার বর্তমানে শূন্যপদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমে গেছে। এ প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা হলে বিভিন্ন পদে বিপরীতে চাকরি প্রার্থীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে।
তিনি বলেন, এতে নিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে যাদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও অনূর্ধ্ব ৩০ বছরের প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে।
এসব শিক্ষার্থীর কথা বিবেচনা করে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই বলে মন্ত্রী জানান।
স্বতন্ত্র এমপি মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদের প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান, বর্তমানে ১১-২০তম গ্রেডের (পূর্বতন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণী) কর্মচারীদের নিয়োগে কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
স্বতন্ত্র এমপি মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক জানান, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫৮ হাজার ১১৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭৮টি নদীতীর প্রতিরক্ষা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১৫টি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ৬৩টি প্রকল্প চলমান রয়েছে।
চট্টগ্রাম-ও আসনের সরকার দলীয় এমপি এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, ২০২১ সালের ১০ জুন হতে ২০২৪ সালের ২৫ জুন পর্যন্ত উক্ত সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মোট ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৯০টি দলিল ই-রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে।