মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শৈশবে মা-দাদাকে হারানোর পর তাঁর একমাত্র অভিভাবক ছিলেন চাচা আবু তালেব। আবু তালেব এতিম ভাজিতাকে নিজের সন্তানের মতো আদর-স্নেহে লালন-পালন করে বড় করে তোলেন। পরিণত বয়সে নিজেই তাঁকে মক্কার সম্ভ্রান্ত নারী খাদিজা রা.-এর সঙ্গে বিযে দিয়েছেন।
নবুয়ত লাভের পর যখন সবাই তাঁর বিপরীতে অবস্থান গ্রহণ করেন সেই কঠিন সময়েও তিনি ভাতিজাকে আগলে রাখেন। মুহাম্মদ সা. নিজেও চাচাকে সর্বোচ্চ শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। তাঁর যেকোনো বিপদ-আপদে পাশে থাকতেন।
আবু তালিব ছিলেন কুরাইশ বংশের অন্যতম প্রবীণ ব্যক্তি। বনু হাশিম গোত্রের সরদার হিসেবে সবার কাছে তাঁর বিশেষ সম্মান ছিল। কিন্তু পরিবারের লোক সংখ্যা বেশি হওয়ায় অভাবে জীবিকা নির্বাহ করতে হতো তাঁকে।
একবার মক্কায় দুর্ভিক্ষ দেখা দিলো। এ সময় চাচা আবু তালেবের পরিবার চালাতে বেশ বেগ পেতে হলো।
চাচার অর্থকষ্টের বিষয়টি অনুভব করলেন মুহাম্মদ সা.। চাচার কষ্ট কমাতে তিনি আরেক চাচা আব্বাস রা.-কে বললেন, বর্তমানে দেশে খুব দুর্ভিক্ষ চলছে। চাচা আবু তালেবের বড় সংসার। সংসার চালাতে তাঁর কষ্ট হচ্ছে। আপনি আমি দুজনে তার সন্তানদের আমাদের সংসারে নিয়ে এলে তাঁর অভাব কিছুটা কমবে।
মুহাম্মদ সা.-এর এই পরামর্শ আব্বাসের খুবই মনঃপূত হলো। তারা দুজনে একসঙ্গে আবু তালেবের কাছে গিয়ে নিজেদের প্রস্তাব জানালেন।
তাঁদের প্রস্তাব শুনে আবু তালেব আকিল নামে এক ছেলেকে নিজের কাছে রেখে বাকিদের নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেন। বললেন— আকিলকে আমার কাছে থাকতে দাও আর অন্যদের ইচ্ছা করলে নিয়ে যেতে পারো।
আবু তালেবের অনুমতির পর হজরত জাফরকে আব্বাস রা. নিয়ে গেলেন আর হজরত আলী রা.-কে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলেন মুহাম্মদ সা.।
(ইসলামের ইতিহাস, ১/৮৮)