Sunday, September 8, 2024
spot_img
Homeঅর্থনীতিকর্মে প্রবেশ করলেও কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থান মেলে না ২ মিলিয়ন তরুণের

কর্মে প্রবেশ করলেও কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থান মেলে না ২ মিলিয়ন তরুণের

দেশে প্রতিবছর প্রায় দুই মিলিয়ন তরুণ কর্মজীবনে প্রবেশ করলেও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয় না। 

শনিবার (৬ জুলাই) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘শিক্ষা ও শিল্পখাতের সম্পর্ক সুদৃঢ়করণ’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় সংগঠনটির সভাপতি আশরাফ আহমেদ এমন মন্তব্য করেন।

ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে ডিসিসিআই বিজনেস ইনস্টিটিউট (ডিবিআই)-এর সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষরকারী সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, বিভিন্ন অনুষদের ডিন এবং অধ্যাপকরা উপস্থিত ছিলেন।

মতবিনিময় সভার স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, দেশে প্রতিবছর প্রায় দুই মিলিয়ন তরুণ কর্মজীবনে প্রবেশ করেছে, যদিও আমরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারছি না। বিআইডিএস’র তথ্য মতে ৬৬ শতাংশ স্নাতক শিক্ষাজীবন সম্পন্নকারী তরুণ কর্মহীন। অপরদিকে বিশ্বব্যাংক বলছে, টেকনিক্যাল খাতে দক্ষ মানবসম্পদের অপ্রতুলতা প্রায় ৬৯ শতাংশ।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের শিল্পখাতের প্রয়োজন মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে বিদেশি দক্ষ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে, যেখানে খরচ হচ্ছে কয়েক বিলিয়ন মার্কিন ডলার, পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে বাংলাদেশি প্রবাসীরাও উচ্চ পারিশ্রমিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে পারছে না। বিদ্যমান বাস্তবতায়, বিশেষ করে শিল্পখাতের প্রয়োজনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে আরো বেশি হারে মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন এবং এ লক্ষ্যে শিক্ষা ও শিল্পখাতের সমন্বয় একান্ত অপরিহার্য।

আশরাফ আহমেদ উল্লেখ করেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিল্পখাতের প্রয়োজনের নিরিখে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে শিক্ষাক্রম সংস্কারসহ প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, যদিও আমাদের দেশে বিষয়টি এখনও কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নয়।

তিনি বলেন, আমাদের শিল্পখাতের চাহিদার বিষয়েটি বিবেচনায় নিয়ে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির লক্ষ্যে ‘ডিসিসিআই বিজনেস ইনস্টিটিউট (ডিবিআই)’ বেশকিছু সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তা ডিপ্লোমা, পোস্টগ্রাজুয়েট-সহ নানামুখী প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করছে।

ইউল্যাবের উপচার্য প্রফেসর ইমরান রহমান বলেন, আমাদের শিক্ষিত তরুণদের প্রায় ৪০ শতাংশ কর্মহীন, যা খুবই হতাশাব্যঞ্জক এবং এ অবস্থা উত্তরণে শিক্ষা ও শিল্পখাতের সুসমন্বয়ের কোনো বিকল্প নেই। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ ও প্রয়োজন সম্পর্কে ধারণা দিতে ইন্টার্নশিপের পাশাপাশি অ্যাপ্রেন্টিজশিপের উদ্যোগ গ্রহণের ওপর তিনি জোরারোপ করেন। এছাড়াও তিনি তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণা কার্যক্রমে শিল্পখাতের আর্থিক বরাদ্দকে কর অব্যাহতির সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, যা এ কার্যক্রমে বেসরকারিখাতকে আরো বেশি হারে সম্পৃক্তকরণে উৎসাহিত করবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান তালুকদার শিক্ষা এবং শিল্পখাতের মধ্যকার আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ানোর ওপর জোরারোপ করেন। তিনি বলেন, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা-কারিকুলাম বেশ ভালো, তবে প্রয়োজনের নিরিখে যা যুগোপযোগী করা যেতে পারে, তবে কারিকুলামের ঘন ঘন পরিবর্তন তেমন সুফল বয়ে আনবে না।

মতবিনিময় সভায় এআইইউবি-এর উপ-উপাচার্য ড. মো. আব্দুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক আলী আক্কাস, নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. একেএম ওয়ারিসুল করিম, বাংলাদেশ ইউনির্ভাসিটি অফ প্রফেশনালস (বিইউপি)-এর ডিন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাহাদাত হোসেনসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

আলোচকরা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর সিএসএআর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমে বরাদ্দ বাড়ানোসহ এ বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন, শিল্পখাতে দক্ষ গ্রাজুয়েটদের নিয়োগদানে ভালো পারিশ্রমিক প্রদান নিশ্চিত করা, ইউজিসি কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নতুন কারিকুলাম দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন, আগামী ১০ বছর শিল্পখাতের কি ধরনের দক্ষ মানবসম্পদ প্রয়োজন তার ডাটাবেজ প্রণয়ন এবং স্টুডেন্ট প্রজেক্টগুলোর অর্থায়নে বেসরকারিখাতকে এগিয়ে আসার জোরারোপ করেন।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments