Saturday, September 7, 2024
spot_img
Homeখেলাধুলাআর্জেন্টিনার ইতিহাস গড়া জয়, কোপার শিরোপা মেসিদের

আর্জেন্টিনার ইতিহাস গড়া জয়, কোপার শিরোপা মেসিদের

লিওনেল মেসি নেই। খেলা শুরুর আগে মাঠের বাইরে কলম্বিয়ান দর্শকদের তোপের মুখে পড়েছিলেন স্বজনরা। অসীম চাপ নিয়ে আর্জেন্টিনা খেলে গেল কোপা আমেরিকার শেষের এক ঘণ্টা। তবে আর্জেন্টিনা খেলেছে নিজেদের সর্বোচ্চটা দিয়ে। কোপা আমেরিকার ফাইনালে লাউতারো মার্টিনেজের ১১২ মিনিটের গোলে ১-০ গোলের জয়ে নিজেদের ইতিহাসের ১৬তম কোপা আমেরিকার শিরোপা নিশ্চিত করল আর্জেন্টিনা। শতবর্ষী এই টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এখন সর্বোচ্চ শিরোপাধারী দল আলবিসেলেস্তেরা। 

একই সঙ্গে নিজেদের এক চক্রপূরণ সম্পন্ন করল আর্জেন্টিনা। ২০২১ সালের কোপা আমেরিকা, ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আর ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা। টানা তিন আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের এক বিরল রেকর্ড গড়ল তারা। যে কীর্তি ছিল কেবল স্পেনের। ২০০৮ থেকে ২০১২ পর্যন্ত ইউরো এবং বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছিল তারা। এবার লাতিন আমেরিকা থেকে তাদের সেই কীর্তিদের ভাগ বসালেন লিওনেল মেসিরা।

এই ম্যাচ দিয়েই নিজের বর্ণিল ক্যারিয়ার শেষ করেছেন আনহেল ডি মারিয়া। শেষটা তার জন্য হলো ছবির মতোই সুন্দর। ২০২১ সালে মারাকানায় তার গোল দিয়েই আর্জেন্টিনা শুরু করেছিল শিরোপা জয়ের এক যাত্রা। এরপর থেকে আরও দুই শিরোপা জয়ের সাক্ষী হয়েছেন। ২০২২ সালের ফিনালিসসিমা আর বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করেছিলেন। আজ গোল না পেলেও লিওনেল মেসির অনুপস্থিতিতে দলের পাপেট মাস্টার হয়ে ছিলেন ডি মারিয়া।

ম্যাচের ৬৩ মিনিটে অ্যাঙ্কেল ইনজুরির কারণে উঠে যেতে হয়েছিল লিওনেল মেসিকে। নামলেন নিকো গঞ্জালেস। ডি মারিয়া আর্মব্যান্ড বাঁধলেন শক্ত করে। যেন দায়িত্বটা বুঝে নিলেন। এরপর ডানপ্রান্ত থেকে একের পর এক বিপজ্জনক ক্রস করে গিয়েছেন ডি মারিয়া। ৩৬ বছর বয়সে এসেও খেললেন ২৬ বছরের টগবগে এক তরুণের মতো করে।

লিওনেল স্কালোনি অবশ্য এদিন স্বস্তি পাননি খুব একটা। পুরো ম্যাচেই তো আধিপত্য ছিল কলম্বিয়ার। প্রথমার্ধে দাঁড়াতেই পারেনি আর্জেন্টিনা। পুরো ৪৫ মিনিট মিলিয়ে গোলে শট ছিল মোটে ১টি। সেখান থেকেই দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনা খেলল ফিরে আসার মতো ফুটবল। যদিও ৬৩ মিনিটে ধাক্কা খেতে হয়েছিল পুরো দুনিয়াকে।

৩৭ মিনিটেই ইনজুরিতে পড়েছিলেন। আক্রমণে যাওয়ার পরেই তাকে কড়া ট্যাকেল করেন কলম্বিয়ার রাইটব্যাক সান্তিয়াগো আরিয়াস। কড়া ট্যাকেলের পর সেখানেই গোড়ালি মচকায় লা পুলগার। এরপরেই ব্যাথানাশক দিয়ে সাময়িক চিকিৎসা চলে মেসির। তার অভিব্যক্তিই বলে দিয়েছিল বাজে ট্যাকেলের শিকার হয়েছেন গোললাইনের কাছে।

তবু অধিনায়ক মেসি সময় নেননি। সাইডলাইনে গেলেও খেলায়ও ফিরে আসেন খানিক পরেই। প্রথমার্ধ শেষ করেছেন সতর্কভাবেই। এরপরের ২৫ মিনিট বিরতির পর আবার ফিরলেন মাঠে। তবে এবারের মেসি আরও বেশি সাবধানী। দ্বিতীয়ার্ধে ৬৩ মিনিটে এলো দুঃস্বপ্নের ক্ষণ। লিওনেল মেসি এবার নিজেই ভারসাম্য হারালেন মচকে যাওয়া পায়ে। সেখান থেকে আর ফেরা হয়নি মেসির। মাঠের চিকিৎসার পর আর্মব্যান্ড তুলে দিলেন আনহেল ডি মারিয়ার কাছে। সাইডবেঞ্চে বসেই এরপর কান্নায় ভেঙে পড়েছেন এলএমটেন। বোঝাই গিয়েছে, শেষটা এমন চাননি মেসি।

নিকো গঞ্জালেস নেমেছিলেন মেসির বদলি হিসেবে। বামপ্রান্তে খেলেছেন দুর্দান্ত। একের পর এক ক্রস ভেসে গিয়েছে তার দিকে। সেই বল ধরে আক্রমণে সুযোগ করেছেন। কখনো নিজেই গোলে নিয়েছেন অসাধারণ শট। ক্যামিলো ভারগাসের অসাধারণ সব সেইভ না দিলে হয়ত লিড আরও আগেই নিতে পারত আর্জেন্টিনা।

আলবিসেলেস্তেরা শেষ পর্যন্ত লিড পায় ১১২ মিনিটে এসে। সেটাও দুই বদলি খেলোয়াড়ের সুবাদে। জিওভানি লো সেলসো নেমেছিলেন বদলি হয়ে। মাঝমাঠে দারুণ ট্যাকেলে বল উইন করে বাড়ালেন থ্রু বল। লাউতারো মার্টিনেজ ভুল করলেন না বিগ ম্যাচের বিগ চান্স। ঠাণ্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে বল জড়ালেন জালে। চলতি আসরে এটি তার ৫ম গোল। ইতালিয়ান লিগের পর এবার কোপা আমেরিকার আসরেও সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন এই নাম্বার নাইন।

পরের ৮ মিনিট কলম্বিয়া চেষ্টার কমতি রাখেনি। তবে সেখান থেকে আসেনি গোল। লিসান্দ্রো মার্টিনেজ আর ক্রিশ্চিয়ান রোমেরো খেলে গেলেন বুক চিতিয়ে।  ব্রাজিলিয়ান রেফারি রাফায়েল ক্লসের শেষ বাঁশিতে নিশ্চিত হলো আর্জেন্টিনার শিরোপা উৎসব।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments