দুই দলের শক্তির পার্থক্য অনেকটা বেশি। ফুটবলীয় কাঠামো থেকে শুরু করে খেলার মান কিংবা সুযোগ-সুবিধা, কোনো দিক থেকেই আর্জেন্টিনার আশেপাশেও নেই ইরাকের নামটা। তবু অলিম্পিকে আলবিসেলেস্তেদের খানিকটা ভুগিয়েছে ইরাক। যদিও দিনশেষে আর্জেন্টিনা বের করে এনেছে চাপে পড়া ম্যাচটা। জিততেই হবে, এমন এক ম্যাচে আর্জেন্টিনা ইরাককে উড়িয়ে দিয়েছে ৩-১ ব্যবধানে।
ফ্রান্সের রোদ ঝলসানো দিনে আর্জেন্টিনার শুরুটাও হয়েছিল দুর্দান্ত। শুরু থেকেই আকাশী-সাদাদের আধিপত্য ছিল চোখে পড়ার মতোই। দশ মিনিটেই বক্সের খানিকটা বাইরে ফ্রিকিক থেকে গোল পেতে পারতেন থিয়াগো আলমাদা। ফ্রিকিক ছিল নিখুঁত। কিন্তু ইরাকি গোলরক্ষক হুসেইন হাসান ছিল দুর্দান্ত। ঝাঁপিয়ে পড়ে বল গ্রিপে নেন। যদিও মিনিট তিনেক পর এই আলমাদাই নাম তোলেন স্কোরশিটে।
বামপ্রান্ত থেকে আসা বলটা হুলিয়ান আলভারেজ ঠিকঠাক রিসিভ করতে পারেননি। কিন্তু তার আলতো টাচই আলমাদার জন্য ছিল যথেষ্ট। ফাঁকায় দাঁড়ানো এই মিডফিল্ডার ভাসানো বলে নিলেন দুর্দান্ত এক কিক। জোরালো সেই শট ঠেকাবার সাধ্য ছিল না ইরাকি গোলরক্ষকের।
প্রথমার্ধে এরপর বলার মতো সুযোগ দুই দলের কেউই খুব একটা জোরালো আক্রমণ করতে পারেনি। এশিয়ান দেশটি অবশ্য বারবারই হুমকি হয়েছে। শক্তিমত্তার দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে তারা। সেটারই সুযোগ নিয়েছে ভালোভাবে। এরিয়াল বলে নিজেদের উচ্চতার সুযোগ নিতে চেয়েছে। বেশ কয়েকবারই ক্রস থেকে ভয় ছড়িয়ে দিয়েছিল দলটি।
৪১ মিনিটে আরও একবার গোলের কাছাকাছি চলে যায় আর্জেন্টিনা। এবারও আলভারেজ-আলমাদা জুটির কল্যাণে। যদিও আর্জেন্টাইন নাম্বার টেনের নেয়া শট চলে যায় বাইরে দিয়ে। যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরে ইরাক। দুর্দান্ত এক ক্রসে ইরাককে গোল এনে দেন আইমান হুসেইন। ১-১ সমতায় দুই দল ফেরে টানেলে।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের লাগাম পুরোপুরি নিজেদের হাতে নিয়ে নেয় হাভিয়ের মাশ্চেরানোর শিষ্যরা। একের পর এক আক্রমণে ব্যস্ত রাখেন হুসেইন হাসানকে। আলমাদা আর ইগনাসিও ফার্নান্দেজ শুরুর ১০ মিনিটে টানা আক্রমণ চালিয়েছেন ইরাকি রক্ষণের ওপর। ৬০ মিনিটে মাশ্চেরানো দলে আনেন তিন বদল। এখানেই ঘুরে যায় ম্যাচের ভাগ্য।
৬০ মিনিটে বদলি নামা কেভিন জেনন বক্সে ফেলেছেন মাপা ক্রস। তাতে মাথা ছুঁইয়ে গোল করেন একইসময়ে বদলি হিসেবে নামা লুসিয়ানো গুন্দো। বদলি নামার ২ মিনিটের মাঝে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন এই দুই তরুণ। গুন্দো ও জেননের সংযুক্তি আর্জেন্টিনাকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে দিয়েছে অনেকটাই।
ম্যাচে আর্জেন্টিনার জয়সূচক গোলটাও এসেছে জেননের সৌজন্যে। জটলার মাঝে বল পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এরপরেই সেটাকে বাইরে ঠেলে দেন। ইগ্নাসিও ফার্নান্দেজের দূরপাল্লার শট আর্জেন্টিনাকে এনে দেয় তৃতীয় গোল। এই জয়ের পর নিশ্চিতভাবেই অলিম্পিকে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে আলবিসেলেস্তেরা।