বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘অসহযোগ আন্দোলন’ কর্মসূচিতে আজ রোববার দিনের শুরুতে সড়কে গণপরিবহনের দেখা মেলেনি বলে জানিয়েছেন নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। প্রগতি সরণি, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, রোকেয়া সরণি, মিরপুর রোড ও জনসন রোড এলাকা থেকে বেশ কয়েকজন বাসিন্দা ফোনে আজকের পত্রিকাকে সড়কের এই চিত্রের কথা জানিয়েছেন।
এ সময় সরেজমিনে দেখা যায়, রামপুরা থেকে কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা পর্যন্ত রাস্তা ব্যাটারিচালিত রিকশা আর সিএনজির দখলে। সড়কে শুধু তুরাগ, রাইদা পরিবহনের দু-একটা বাস দেখা গেলেও তাতে খুব বেশি যাত্রীও নেই। সড়কের আশপাশে অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ।
জনসন রোড এলাকা থেকে অন্বেষা মজুমদার বলেন, ‘পুরান ঢাকা কেমন যেন থমথমে। পণ্যবাহী কিছু ট্রাক চলাচল করছে, আর জরুরি প্রয়োজনে যাঁরা বের হয়েছেন তাঁরা সিএনজিচালিত অটোরিকশা খুঁজছেন। রিকশা চলাচল করছে বেশ কিছু।
বাংলাবাজার, সদরঘাটের বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে এসে তিনি জানান, রোববার সকালের এই ব্যস্ততা ছিল নদীবন্দরকেন্দ্রিক।
শ্যামলী শিশুমেলা থেকে সাঈদুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কে বাসের দেখা মেলেনি। সকাল ৮টা থেকে ৮টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, পরে তিনজন মিলে একটা সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করেছি। অনেক অনুরোধের পর মতিঝিল অবধি যেতে রাজি করালাম।’
সড়কে বাস চলাচলের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সড়কে বাস চলাচলের বিষয়ে আমরা কোনো বাস মালিক বা চালককে নির্দেশনা দেইনি। অবরোধকারীরা সড়কে বাস চলতে দিচ্ছে না। জায়গায় জায়গায় ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কোনো বাসমালিক সড়কে বাস নামাতে না চাইলে কী করা যাবে! দূরপাল্লার বাসের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তবে দেশের যা অবস্থা, যাত্রীরা এখন দূরে জার্নি করতে চাইবেন না।’
এদিকে দুই দিন স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচলের পর আজ রোববার থেকে আবার ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘শনিবার রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মহোদয়ের কাছ থেকে একটা নোটিশ পেয়েছি। তাতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’
রেলওয়ে পূর্বের এক চিঠিতে বলা হয়, অনিবার্য কারণবশত রোববার সব ট্রেন বন্ধ ঘোষণা করা হলো। যাত্রীবাহী ট্রেনের পাশাপাশি পণ্যবাহী, তেলবাহী ট্রেন চলাচলও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার রাতে রেলওয়ে ঢাকা অফিস থেকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ১৭ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে টানা ১৪ দিন বন্ধ ছিল। এর মধ্যে ট্রেন এক দিন চালু হওয়ার কথা থাকলেও হয়নি। গত ১ আগস্ট স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনাসহ কয়েকটি শহর থেকে আশপাশের গন্তব্যে মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু হয়।