Monday, September 16, 2024
spot_img
Homeবিশ্বসৌদি আরবে অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র

সৌদি আরবে অস্ত্র বিক্রির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করল যুক্তরাষ্ট্র

সৌদি আরবের কাছে ভারী অস্ত্র বিক্রির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বিষয়টির সঙ্গে পরিচিত তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার (৯ আগস্ট) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ইয়েমেন যুদ্ধ বন্ধ করতে সৌদি আরবকে চাপ দেওয়ার জন্য তিন বছরের পুরোনো নীতি উল্টে দিল বাইডেন প্রশাসন—এমনটিই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

বাইডেন প্রশাসন গত সপ্তাহে কংগ্রেসকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবহিত করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন কংগ্রেসের একজন সহকারী। একটি সূত্র বলেছে, আগামী সপ্তাহের প্রথম দিকে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রি শুরু হতে পারে। অন্য একটি সূত্র বলছে, অস্ত্র বিক্রির সময় নিয়ে আলোচনা এখনো চলছে।

বাইডেন প্রশাসনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘সৌদিরা তাদের চুক্তির শর্ত পূরণ করেছে এবং আমরাও আমাদেরটি পূরণের জন্য প্রস্তুত। কংগ্রেসের উপযুক্ত নির্দেশনা ও পরামর্শের ভিত্তিতে এই বিষয়গুলোকে এখন নিয়মিত অবস্থায় ফিরিয়ে আনা হবে।’

মার্কিন আইনের অধীনে বড় আন্তর্জাতিক অস্ত্র চুক্তিগুলো চূড়ান্ত হওয়ার আগে কংগ্রেস সদস্যরা পর্যালোচনা করেন। ডেমোক্রেটিক এবং রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরবে ভারী অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ইয়েমেনে এই দেশের সামরিক অভিযানে বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগের বিষয়গুলো তাঁরা উল্লেখ করেছেন।

কিন্তু ইসরায়েলে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর এবং ইয়েমেনে অভিযান পরিচালনার কৌশল পরিবর্তনের পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যে অশান্তির পরিস্থিতিতে মার্কিন কংগ্রেস থেকে আগের মতো আর আপত্তি জোরালো হচ্ছে না।

তেহরানে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়া নিহত হওয়ার পর ইরান ও লেবাননের শক্তিশালী ইরান–সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। গত মাসের শেষের দিক থেকে এই অঞ্চলে হুমকির মাত্রা বেড়েছে।

এদিকে বাইডেন প্রশাসন একটি বিস্তৃত চুক্তির অংশ হিসেবে রিয়াদের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা চুক্তি এবং বেসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতার জন্য একটি চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছে। মূলত ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি অনুঘটক হিসেবে এটি কাজ করবে বলে আশা করছে বাইডেন প্রশাসন।

২০২২ সালের মার্চ থেকে যখন সৌদি এবং হুতিরা জাতিসংঘের নেতৃত্বে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়—তখন ইয়েমেনে কোনো সৌদি বিমান হামলা হয়নি এবং বিপরীতে ইয়েমেন থেকেও সৌদি আরবে আন্তসীমান্ত গোলাগুলি অনেকাংশে বন্ধ হয়ে গেছে, এমনটাই বলছেন বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

জো বাইডেন ২০২১ সালে সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রির বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেন। ইয়েমেনে ইরান ঘনিষ্ঠ হুতিদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের সামরিক অভিযানের কথা উল্লেখ করেন তিনি। এসব অভিযানে বহু বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।

ইয়েমেনের যুদ্ধকে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রক্সি যুদ্ধের একটি হিসেবে দেখা হয়। হুতিরা ২০১৪ সালের শেষের দিকে সানা থেকে সৌদি–সমর্থিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং ২০১৫ সাল থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত। এই ভূখণ্ডে এই সংঘাতে কয়েক লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে এবং ইয়েমেনের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশ এখন আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

মার্কিন প্রশাসনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা হুতিদের সক্ষমতা হ্রাস করার জন্য নিয়মিত বিমান হামলা চালাচ্ছি। এটি একটি প্রচেষ্টা যা চলমান এবং অংশীদারদের সঙ্গে এই কার্যক্রম যৌথভাবে চলবে।’

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments