বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষের বাইরে বল নিয়ে বসে আছে কয়েকজন শিশু। দেখেই বোঝা যাচ্ছে তারা কেউ স্কুলে ক্লাস করতে নয় খেলতে এসেছে। ভবনের প্রবেশের গেটটিও খোলা। প্রবেশ করতেই শোনা যাচ্ছে শ্রেণির কক্ষে বৈদ্যুতিক ফ্যান ঘোরার শব্দ। আর সেই শ্রেণি কক্ষে প্রবেশ করতে দেখা মেলেনি কোনো শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের। তবে মেঝেতে রয়েছে ধান। যা ফ্যানের বাতাসে ধান শুকানো হচ্ছে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার নওদাবাস ইউনিয়নের তরুগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কক্ষে ধান শুকানোর ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই বিদ্যালয়ের আরও একটি শ্রেণি কক্ষে প্রতিনিয়ত চলে রান্নার কাজ। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমন কার্যক্রম নিয়ে চলছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের একটি শ্রেণি কক্ষের মেঝেতে ভেজা ধান রাখা হয়েছে। ধান শুকাতে ব্যবহার করা হচ্ছে শ্রেণি কক্ষের ফ্যান। অপর দিকে আর একটি কক্ষে দেখা গেছে ইলেকট্রনিক চুলা, হাঁড়ি, পাতিলসহ রান্নার কাজে ব্যবহৃত নানা তৈজসপত্র। স্কুল চলাকালীন ওই কক্ষে প্রতিদিন চলে শিক্ষকদের খাবারের আয়োজন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাঁদের ইচ্ছেমতো স্কুল পরিচালনা করেন। মন চাইলে স্কুল আসে, না চাইলে আসে না। তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে উল্টো ভয় ও হুমকি দেয়। তরুগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অতি সুন্দর রায় বলেন, ‘এটি অনেক আগের পুরোনো ভিডিও। বিদ্যালয়ের চাবি শিক্ষক শোভা রানীর নিকট ছিল। তিনি তার বাড়ির ধান শুকিয়েছেন। পরবর্তীতে আমরা তার কাছ থেকে চাবি নিয়ে নিই। তাঁকে এ ধরনের কাজ আর না করতে নিষেধ করা হয়েছে।’
শ্রেণি কক্ষে ধান শুকানোর বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা অফিসার মিঠুন বর্মন বলেন, ‘এটা কখনো কাম্য নয়। আমি বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি জানা নেই। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, আমি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’