রুশ বাহিনীর জোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইউক্রেনের বন্দর নগর ওডেসায় অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৭৩ জন। আহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের আঘাত গুরুতর।
সামরিক অভিযানের গত ২ বছরে কৃষ্ণ সাগরের তীরবর্তী এই শহরটিতে যত আঘাত হেনেছে রুশ সেনারা, সেসবের মধ্যে এটিকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
শুক্রবার সকাল থেকে রাশিয়াজুড়ে শুরু হয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ; ভোট শুরুরু কয়েক ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় বেলা ১১ টার দিকে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে ওডেসায়। সেটির আঘাতের পর ইউক্রেনের জরুরি পরিষেবা বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। সে সময় দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়ে রুশ সেনারা
সামরিক পরিভাষায় এ ধরণের ক্ষেপণাস্ত্র হামলাকে ‘ডবল ট্যাপ হামলা’ বলা হয়। জরুরি পরিষেবা বিভাগের মুখপাত্র মারিয়ানা অ্যাভেরিনা মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেছেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এই প্রথম ওডেসায় ‘ডবল ট্যাপ’ হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী।
‘প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানার পর জরুরি পরিষেবা বিভাগের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ এবং ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনদের উদ্ধার করার কাজ শুরু করেছিল। সে সময়েই দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে,’ সিএনএনকে বলেছেন মারিয়ানা অ্যাভেরিনা।
দ্বিতীবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আঘাতে ডেনিস কোলেসনিকভ (২৫) নামের এক জরুরি পরিষেবা কর্মী নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত ৭৩ জনের মধ্যে জরুরি পরিষেবা বিভাগের অন্তত ৭ জন কর্মী রয়েছেন বলে সিএনএনকে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রসিকিউটর জেনারেল আন্দ্রিয়ে কোস্টিন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় এক ভিডিওবার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রুশ বাহিনীর এই হামলাকে ‘ঘৃণ্য কাপুরুষতা’ উল্লেখ করে বলেছেন, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী এই হাশলার সমুচিত জবাব দেবে। ধ্বংসস্তূপ থেকে লোকজনকে উদ্ধারে জরুরি পরিষেবা বাহিনীর তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের ইউক্রেন বিষয়ক কর্মকর্তা ডেভিড ব্রাউন এক বিবৃতে রুশ বাহিনীর হামলাকে ‘পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য’ বলেছেন। নিহতদের পরিবারের সদস্যদের স্বান্তনাও দিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ওডেসার সমুদ্রবন্দরটি ইউক্রেনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ গম-ভুট্টা উৎপাদনকারী দেশ ইউক্রেনের অধিকাংশ খাদ্যশস্য অন্যান্য দেশে পাঠানো হয় এই বন্দর থেকে। দেশটির নৌবাহিনীর সবচেয়ে বড় ঘাঁটিটির অবস্থানও ওডেসায়।
সূত্র : সিএনএন