আইপিএলের এবারের আসরের প্রথম ম্যাচেই ঝলক দেখালেন মোস্তাফিজুর রহমান। বিধ্বংসী বোলিংয়ে জয়ের ভিত গড়ে দিলেন চেন্নাই সুপার কিংসকে। যে ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে সহজেই হারিয়েছে চেন্নাই।
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা জিতেছে ৬ উইকেট আর ৮ বল হাতে রেখে। জয়ের নায়ক বাংলাদেশি পেসার মোস্তাফিজুর রহমান।
লক্ষ্য ছিল ১৭৪। রান তাড়ায় রাচিন রাবিন্দ্রর ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা করে চেন্নাই। অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড় ১৫ বলে ১৫ করে আউট হয়ে গেলেন রাচিন সমান বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় খেলেন ৩৭ রানের ঝোড়ো ইনিংস।
এরপর আজিঙ্কা রাহানে আর ড্যারেল মিচেল দলকে অনেকটা পথ এগিয়ে দেন। রাহানে ১৯ বলে ২৭ আর মিচেল ১৮ বলে করেন ২২ রান। টানা দুই ওভারে এই দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে চেন্নাইকে চাপে ফেলেন ক্যামেরন গ্রিন।
সেখান থেকে রবীন্দ্র জাদেজা আর ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার (মোস্তাফিজের বদলি) শিভাম দুবে ৩৭ বলে ৬৬ রানের জুটিতে ম্যাচ বের করে নেন। জাদেজা ১৭ বলে ২৫ আর দুবে ২৮ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে মোস্তাফিজের বিধ্বংসী বোলিংয়ের পরও ৬ উইকেটে ১৭৩ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়ে যায় বেঙ্গালুরু।
৭৮ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে অনুজ রাওয়াত আর দিনেশ কার্তিক ৫৭ বলে বেঙ্গালুরুকে এনে দেন ৯৫ রান। কার্তিক ২৬ বলে ৩৮ আর রাওয়াত ২৫ বলে করেন ৪৮ রান।
নিজের প্রথম তিন ওভারে রীতিমত কাঁপালেন প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের। বিরাট কোহলিসহ আউট করলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ৪ ব্যাটারকে। ৩ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিং ফিগার ছিল ৩-০-১৪-৪। শেষ ওভারে অবশ্য একটু খরুচে ছিলেন। তবু সবমিলিয়ে ম্যাচের সেরা বোলার মোস্তাফিজই।
চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসি। ঝোড়ো শুরু করে বেঙ্গালুরু। প্রথম ৪ ওভারে তারা তোলে ৩৭ রান।
রানের গতি কমাতে ইনিংসের পঞ্চম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানকে আক্রমণে আনেন চেন্নাই অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। প্রথম ওভারেই ঝলক মোস্তাফিজের। তৃতীয় বলে পান উইকেটের দেখা।
মারকুটে শুরু করেছিলেন ফ্যাফ ডু প্লেসি। কাটারে বেঙ্গালুরু অধিনায়ককে ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ বানান মোস্তাফিজ। ২৩ বলে ৩৫ রানের থামে ডু প্লেসির ঝড়।
দুই বল পর আরও এক উইকেট মোস্তাফিজের। মোস্তাফিজের সুইং বুঝতে না পেরে ব্যাটে লাগিয়ে এজ হন রজত পাতিদার (০), সহজ ক্যাচ নেন উইকেটরক্ষক মহেন্দ্র সিং ধোনি। প্রথম ওভারে ২ উইকেট নিয়ে মোস্তাফিজের খরচ মাত্র ৪ রান।
১২তম ওভারে ফের মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন চেন্নাই অধিনায়ক। এবারও দুর্দান্ত বোলিং মোস্তাফিজের। বিরাট কোহলি মারতে গিয়েছিলেন ছক্কা। কিন্তু বাউন্ডারিতে রাহানে আর রাচিন দুজন মিলে দারুণ বোঝাপড়ায় নেন ক্যাচ। ২০ বলে ২১ করে ফেরেন কোহলি।
ওই ওভারেই আরেক সেট ব্যাটার ক্যামেরন গ্রিনকে দুর্দান্ত কাটারে বোল্ড করেন মোস্তাফিজ। ২২ বলে গ্রিনের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভারে মাত্র ৩ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার ফিজের। ২ ওভারে ৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট!
মাঝখানে রান বিলিয়েছেন থিকসানা-দীপক চাহাররা রান বিলিয়েছেন। ১৭তম ওভারে আবার মোস্তাফিজের শরণাপন্ন চেন্নাই। এবার উইকেট না পেলেও কাটার মাস্টার খরচ করেন মাত্র ৭ রান।
দলের ১৯তম ও মোস্তাফিজের শেষ ওভারটি অবশ্য ভালো হয়নি। একটি ছক্কা ও চারসহ ওই ওভারে ১৬ রান দিয়ে ফেলেন বাঁহাতি এই পেসার। সবমিলিয়ে ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে মোস্তাফিজের শিকার ৪ উইকেট।