Thursday, September 19, 2024
spot_img
Homeজাতীয়শুক্রবার ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি

শুক্রবার ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি

আগামীকাল শুক্রবার (২ আগস্ট) ‘প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল’ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে কর্মসূচির বিষয়ে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের।

বিবৃতিতে আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের প্রাণের জন্মভূমি আজ এক মহাসংকটকাল অতিক্রম করছে। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারদলীয় সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে শান্তিপ্রিয় ছাত্র-জনতার রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করছে। কারও পরিচয় শিক্ষার্থী হলে তার ফোন চেক করে অত্যাচার-নির্যাতন চালানোর মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড, অথচ আজ ছাত্র হওয়া যেন অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক সমাজও রক্ষা পাচ্ছে না তাদের নির্যাতনের হাত থেকে। তারা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করতেও ছাড়ছে না। শিক্ষার্থী ও আন্দোলনের সমর্থনকারী ছাত্র-জনতা কাউকে পেলেই গ্রেফতার ও এর মাধ্যমে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। পরে বাছাই করে পাড়া-মহল্লায় রেইড দিয়ে গণগ্রেফতারের নামে গ্রেফতার বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে তারা।’

তিনি বলেন, ‘গুম করার হুমকি দিয়ে আদায় করছে মোটা অংকের অর্থ। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়জন সমন্বয়কসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে বুধবার গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ কেন্দ্রীয় ছয় সমন্বয়ককে ডিবি কার্যালয় থেকে ছেড়ে দিলেও এখনো ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আক্তার হোসেন, সমন্বয়ক আরিফ সোহেলসহ অসংখ্য ছাত্র-জনতাকে কারাগার ও রিমান্ডে নির্যাতন করছে। জুলুম নির্যাতনে নিষ্পেষিত ছাত্র-জনতা মুক্তির প্রহর গুনছে। অসংখ্য ছাত্র-জনতা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে চিরতরে পঙ্গু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা নিয়ে। অনেক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ চোখ, কান, হাত, পা কিংবা শরীরের অন্য কোনো অঙ্গ হারিয়ে চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম এ সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘আজ ছাত্রসমাজ ঘরে শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না। প্রতি মুহূর্তে কাটাতে হচ্ছে গ্রেফতার ও গুম হওয়ার আতঙ্কে। শহীদ ও গুম হওয়া মানুষের স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠছে বাংলার আকাশ-বাতাস। এছাড়া আগামীর বাংলাদেশ গড়ার কারিগর জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর ক্যাম্পাসের ভেতরে হামলা করেছে পুলিশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক শেহরীন আমিন মোনামী ও নুসরাত জাহান চৌধুরীর গায়েও হাত তুলেছে পুলিশের কিছু কর্মকর্তা। এ ঘৃণ্য হামলার আমরা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আমাদের কোনো ব্যক্তি স্বার্থের জন্য আন্দোলন করছি না। আমাদের আন্দোলন আপনার ও আপনার সন্তানের মুক্তির জন্য। কী অপরাধ ছিল আমাদের? সাংবিধানিক অধিকার চাওয়াটা কি আমাদের অপরাধ? কী অপরাধে শত শত ভাইকে হত্যা করা হলো? আমরা এর জবাব জানি না। কিন্তু এর জবাব ও বিচার না নিয়ে আমরা আমাদের আন্দোলন থামাবো না। জাতির এই দুর্দিনে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার অপরাধে শহীদ, আহত, পঙ্গু ও গ্রেফতার হওয়া সবার স্মরণে আগামীকাল দেশব্যাপী প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’

কর্মসূচি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা, গণহত্যা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া, শহীদদের কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও জুমার নামাজ শেষে ছাত্র-জনতার গণমিছিল করবে। শিক্ষার্থীরা শ্রমিক, পেশাজীবী, সংস্কৃতিকর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মানবাধিকারকর্মী, বুদ্ধিজীবী, আলেম-ওলামাসহ বাংলাদেশের সব স্তরের নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তারা আগামীকালের প্রার্থনা ও ছাত্র জনতার গণমিছিল কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান।

 

আব্দুল কাদের বলেন, ‘মসজিদের ইমাম ও খতিবদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে চুপ থাকবেন না। মসজিদের মিম্বর থেকে প্রতিবাদের ঘোষণা দিন। মাদরাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারাই জাতির দুর্দিনের কান্ডারি। এ দুঃসময়ে ঘরে বসে না থেকে গণহত্যা ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে বাদ জুমা মসজিদ ও মাদরাসা থেকে ছাত্র-জনতার গণমিছিল বের করুন।’

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments