সারাদেশে আজ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। একই সঙ্গে রোববার থেকে অনির্দিষ্টকালের ‘সর্বাত্মক অসহযোগ’ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে উত্তরার বিএনএস সেন্টারের সামনে প্রায় অর্ধশত পুলিশের সদস্যরা অবস্থান নিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সঙ্গে রাখা হয়েছে আর্মড পার্সোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি)।
শনিবার (৩ আগস্ট) সকালে বিএনএস সেন্টারের সামনে ঘুরে দেখা যায়, মার্কেটের সামনে প্রধান সড়কের পাশে রাখা হয়েছে এপিসি। মার্কেটের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান করছে পুলিশের সদস্যরা। মার্কেটের পেছনের সড়কগুলোতে রয়েছে উত্তরা পশ্চিম থানার বেশ কিছু গাড়ি। সেগুলোতেও রয়েছে পুলিশের সদস্যরা। সকালে ১১টা ১৫ মিনিটের দিকে উত্তরা বিভাগের পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে আসেন। এ সময় অস্ত্রসহ পুলিশ সদস্যদের সর্তক থাকতে দেখা যায়।
তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভকারী কাউকে সড়কে বা মার্কেটের সামনে দেখা যায়নি।
এদিকে গতকাল শুক্রবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা দাবিতে শনিবার (৩ আগস্ট) সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়া হলো।
তিনি বলেন, আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট ঘোষণা করছি, শনিবার সারা দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায়, প্রতিটি জায়গায় বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। এরপর থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন পালিত হবে।
যেসব স্থানে বিক্ষোভ করার কথা রয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শনিবার বেলা ১১টায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাশে যমুনা গেইটে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবেন নর্দার্ন, নর্থ সাউথ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল, স্টেট, গ্রিন, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ও ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা।
একই সময়ে ব্র্যাক, ইস্ট ওয়েস্ট, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রামপুরা এলাকায় কর্মসূচি পালন করবেন।
উত্তরা বিএনএস সেন্টারের সামনে আইইউবিএটি, বিইউএফটি, শান্তা মরিয়ম, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি, মানারাত ইউনিভার্সিটি, রাজউক কলেজ, উত্তরা হাই স্কুল, মাইলস্টোন কলেজ, ট্রাস্ট কলেজের শিক্ষার্থীরা অবস্থান করবেন।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও পেশাজীবীদের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
উল্লেখ্য, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গত ১৬ জুলাই থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার ঘটনা ঘটতে থাকে। এসব ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত ১৫০ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ সংখ্যা দুই শতাধিক বলে দাবি করা হচ্ছে।