Monday, May 13, 2024
spot_img
Homeবিশ্বমুসলিম অভিবাসীদের ওপর নাগরিকত্ব আইনের প্রভাব নিয়ে যা বলল ভারত সরকার

মুসলিম অভিবাসীদের ওপর নাগরিকত্ব আইনের প্রভাব নিয়ে যা বলল ভারত সরকার

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) কারণে ভারতীয় মুসলিমদের স্বাধীনতা ও সুবিধা খর্ব করা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে ভারতীয় সরকার। আজ বুধবার দেশটির সরকার বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে মুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব নিতে কোনও বাধা নেই বলে ঘোষণা দেয়।

সরকার গত সোমবার এই আইন কার্যকরের পরই ভারতীয় মুসলিম ও বিরোধী দলের কাছ থেকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে বিজেপি সরকার। বিরোধী দল কংগ্রেসের দাবি, আসছে লোকসভা নির্বাচনে মেরুকরণ করতেই এই আইন কার্যকর করেছে বিজেপি সরকার। প্রায় চার বছর আগে ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর বিতর্কিত এই আইন পাস করে ভারত সরকার। তবে বিভিন্ন সময়ে এই আইন কার্যকরের ঘোষণা দিয়ে তা থেকে পিছিয়ে আসে বিজেপি সরকার।

আজ বুধবার ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘নাগরিকত্ব আইনের ৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে আসা মুসলিমরা ভারতীয় নাগরিকত্ব চাইতে পারেন। এই আইনে আবেদনের ভিত্তিতে স্বাভাবিকভাবেই তিনি ভারতের নাগরিক বলে গণ্য হবেন।’

সিএএ আইন অনুসারে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যেসব হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন ও পার্সিধর্মীয় সংখ্যালঘু সাম্প্রদায়িক নির্যাতন ও নিপীড়নের কারণে ভারতে এসেছেন, এই আইনে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। সংশোধনীতে অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের যোগ্যতার সময়সীমা ১১ থেকে কমিয়ে ৫ বছর করা হয়েছে।

অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করে, এই আইনটি ‘বিদ্যমান আইন অনুসারে, ইসলামি দেশগুলোতে (পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান) নিজের মতো করে ইসলাম পালনের জন্য নিপীড়িত কোনো মুসলিমকে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে বাধা নেই’।

মন্ত্রণালয় আরও বলে, ‘সিএএ স্বাভাবিকভাবে নাগরিকত্বের আবেদনের আইনকে বাতিল করে না। অতএব, বিদ্যমান আইন অনুসারে, ভারতীয় নাগরিক হতে ইচ্ছুক যে কোনো দেশ থেকে আসা মুসলিম অভিবাসীসহ যে কোনো ব্যক্তি নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।’

সিএএ নিয়ে মুসলিমদের একাংশের আশঙ্কা দূর করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়টি জানায়, ভারতীয় মুসলমানদের উদ্বিগ্ন হওয়ার দরকার নেই কারণ সিএএ তাঁদের নাগরিকত্বকে প্রভাবিত করার মতো কোনো বিধান করেনি। বর্তমান ১৮ কোটি ভারতীয় মুসলমানের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই। হিন্দুদের মতোই তাঁদের সমান অধিকার রয়েছে।

বিতর্কিত আইনটি কার্যকরের পরপরই ভারতের বিভিন্ন অংশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন, এই আইনটি তাদের অবৈধ অভিবাসী ঘোষণা করতে এবং তাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে সরকার এসব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বলেছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব পেতে এই আইনটি প্রয়োজন।

মন্ত্রণালয় বলে, ‘নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য কোনো ভারতীয় নাগরিককে কোনো ধরনের নথি দেখাতে বলা হবে না। নাগরিকত্ব আইনে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়ন নিয়ে কোনো কথা বলা হয়নি। তাই সিএএ মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে— মুসলিম ও শিক্ষার্থীসহ একাংশের এমন উদ্বেগ অযৌক্তিক।’

ভারত সরকার এক বিবৃতিতে বলে, এই তিনটি দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কারণে সারা বিশ্বে ইসলাম চরম কলঙ্কিত হচ্ছে। তবে শান্তির ধর্ম হওয়ায় ইসলাম কখনো ধর্মীয় ভিত্তিতে ঘৃণা/সহিংসতা/নিপীড়নের প্রচার বা পরামর্শ দেয় না। নিপীড়নের প্রতি সমবেদনা ও ক্ষতিপূরণ প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে প্রণীত এই আইন নিপীড়নের নামে ইসলামকে কলঙ্কিত হওয়া থেকে রক্ষা করে।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments