Saturday, July 27, 2024
spot_img
Homeজাতীয়বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ে সোমালিয়ার জলদস্যুদের ৩ আস্তানা: ইইউ নেভি

বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ে সোমালিয়ার জলদস্যুদের ৩ আস্তানা: ইইউ নেভি

বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর ছিনতাই হওয়ার ছয় দিন হতে চলল। প্রতীক্ষিত মুক্তিপণের জন্য এখনো জলদস্যুদের পক্ষ থেকে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি। এর মধ্যে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি সর্বশেষ অবস্থান থেকে সরে গিয়ে নতুন জায়গায় নোঙর করেছে। ভারত মহাসাগরে টহলে থাকা ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর (ইইউ নেভি) আটলান্টা অপারেশনের একটি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর পিছু নিয়েছে।

ইইউ নেভির সর্বশেষ তথ্য বলছে, সোমালিয়ার তিনটি জায়গায় এই জলদস্যুদের আস্তানা আছে। সেসব জায়গা থেকে জাহাজ ছিনতাইয়ের কর্মকাণ্ডে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়। সোমালিয়া উপকূলের উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ অঞ্চলে এই তিনটি আস্তানা শনাক্ত করা হয়েছে।

গত ১৪ মার্চ সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে ইইউ নেভি জানায়, এমভি আবদুল্লার পরিস্থিতি অপরিবর্তিত আছে এবং ২৩ নাবিকের সবাই নিরাপদ, ক্রুরা নিরাপদে আছেন বলে খবর মিলেছে। ভারত মহাসাগরে সামুদ্রিক নিরাপত্তায় সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপের জন্য বাংলাদেশ ও সোমালি কর্তৃপক্ষসহ সব অংশীদারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে অপারেশন আটলান্টা।

ইইউ নেভির ধারণা, এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাইয়ে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ছিনতাই হওয়া মাল্টার পতাকাবাহী বাল্ক ক্যারিয়ার রুয়েনকে ব্যবহার করেছে জলদস্যুরা। ঘটনার সময় জাহাজের অবস্থান ছিল সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুর ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে।

স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং থেকে নেওয়া ছবির বরাত দিয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএমওএ) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জানান, গত বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) রাত ৮টার দিকে জাহাজটি সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে সাত নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল সমান ১ দশমিক ৮৫২ কিলোমিটার) দূরে নোঙর করা ছিল। পরে অবস্থান বদলে উপকূলবর্তী গদবজিরান নামক স্থান থেকে মাত্র ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করা আছে।

সোমালি জলদস্যুরা কয়েক দশক ধরে ত্রাস সৃষ্টি করে ২০১৮ সালের দিকে এসে কিছুটা স্তিমিত হয়ে যায়। এরপর গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালের শেষ দিকে এসে ফের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে তারা এবং মাল্টার পতাকাবাহী এমভি রুয়েনকে ছিনতাই করে।

ইইউ নেভি বলছে, রুয়েন থেকে এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করার অপারেশন পরিচালনার অর্থ হলো, জলদস্যুরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। কারণ, সাধারণত তারা বেশি সক্রিয় হয়ে উঠলেই এ ধরনে কৌশল ব্যবহার করে থাকে।

এই সংস্থা আরও বলেছে, বিভিন্ন ভিজুয়াল তথ্য থেকে অনুমান করা হচ্ছে, সম্ভবত এমভি রুয়েন থেকেই অন্তত ১২ জন জলদস্যু এমভি আবদুল্লাহে উঠে ছিনতাই কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে।

কেএসআরএম গ্রুপের কয়লাবোঝাই জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ভারত মহাসাগরে জলদস্যুর কবলে পড়ে। এরপর নাবিকদের আত্মীয়স্বজন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় আছেন।

এর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) জাহাজটি সোমালিয়ার উপকূলে দস্যুদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় পৌঁছানোর পর ২৩ নাবিককে নিজ নিজ কেবিনে থাকার সুযোগ দেয় সোমালি জলদস্যুরা।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর একই গ্রুপের আরেকটি জাহাজ জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল। সেই জাহাজের নাম ‘এমভি জাহান মণি’। বড় অঙ্কের মুক্তিপণের বিনিময়ে ১০০ দিনের মাথায় মুক্তি পান ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রী।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments