মুন্সীগঞ্জে দিন দিন বেড়েই চলছে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আহতের সংখ্যা। আহতদের মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিরা হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। বর্তমানে হাসপাতালে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আহতদের চাপ বেড়ে গেছে।
জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকা থেকে আহত ব্যক্তিরা নিয়মিত এসে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। গত ফেব্রুয়ারি মাস ও মার্চ মাসের ২০ তারিখ পর্যন্ত মোট ৫০ দিনে শুধু মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে কুকুর বিড়ালের আক্রমণের শিকার হয়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন ১০৪৩ জন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৫৩৩ জন মানুষ কুকুর-বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নিয়েছিল। এর মধ্যে কুকুরে কামড়ানোর সংখ্যা ছিল ৩০২ জন এবং বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীর আক্রমণের শিকার হয়েছেন ২৩১ জন।
চলতি মার্চ মাসেও বেড়েছে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। চলতি মার্চ মাসের শুরু থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত ৫১০ জন নানা বয়সী মানুষ কুকুরের কামড় ও বিড়ালের আঁচড়ে রক্তাক্ত হয়ে হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। এ নিয়ে গত ১ মাস ২০ দিনে মোট ১০৪৩ জন মানুষ কুকুর-বিড়াল ও অন্যান্য বিষাক্ত প্রাণীর আক্রমণে আক্রান্ত হয়েছেন।
বিড়ালের কামড়ে আহত সদর উপজেলার সিকদারকান্দি গ্রামের বেবি বেগম জানান, বাসায় থাকা একটি বিড়াল আমার ভাবিকে কামড়াচ্ছে। আমি তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে বেশ কয়েকটা বিড়াল আমার হাত কামড়ে রক্তাক্ত যখম করে। পরে আমি এবং ভাবি মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নিয়েছি। আমাদেরকে মোট ৪ দিন এসে নিয়মিত ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে হয়েছে।
ভুক্তভোগী ছবিনা বেগম জানান, রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলাম হঠাৎ করে একটি পাগলা কুকুর এসে আমার পায়ে কামড় দিয়ে আমার সামনে থাকা আরও দুইজন পথচারীকে কামড়াতে শুরু করে। আমার পায়ে রক্তাক্ত যখম হয়েছে। একই সময় আরও ৪ জনকে একই কুকুর কামড়ায় তারাও হাসপাতালে এসে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। কয়েকদিন আগে তার ছেলেকেও কুকুরে কামড় দিয়েছিল বলেও জানান ওই নারী।
ভ্যাকসিন প্রদানকারী নার্সরা জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়। প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী ভ্যাকসিন গ্রহণ করছেন। কোনো কোনো দিন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জন আক্রান্ত মানুষ ভ্যাকসিন নিতে আসেন। অধিকাংশ রোগীর হাত, পা, পিঠ, পেট, ও গালসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কুকুর-বিড়ালের কামড়ের দাগ নিয়ে আসেন।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল বলেন, কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে মানুষ হাসপাতালে ছুটে আসছেন। আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভ্যাকসিন রয়েছে। যারাই হাসপাতালে কুকুর-বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে আসছেন তাদের সবাইকেই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। পাগলা কুকুরের কামড় থেকে রক্ষা পেতে সবাইকে সচেতন হতে হবে।