Sunday, May 12, 2024
spot_img
Homeখেলাধুলাঅমনোযোগের কারণে শেষ সময়ে হারল বাংলাদেশ

অমনোযোগের কারণে শেষ সময়ে হারল বাংলাদেশ

শেষদিকে বাংলাদেশের রক্ষণে হামলে পড়ল ফিলিস্তিন। তাদের আবার এক ফুটবলার কম। প্রতিপক্ষের এক ফুটবলার কম হওয়ায় ঢিলে হয়ে গেল বাংলাদেশের রক্ষণ। আর তাতেই ঘটল সর্বনাশ।

২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে পাঁচ দিন আগে ফিলিস্তিনের কাছে কুয়েতে বিধ্বস্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। ফিরতি লেগে সেই শোক কাটিয়ে ওঠার একটাই অনুপ্রেরণা ছিল লাল-সবুজদের—খেলাটা কিংস অ্যারেনায়, আর সেখানে কখনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হারেনি বাংলাদেশ। ৯০ মিনিট পর্যন্ত ঠেকিয়ে আরেক ম্যাচ পর্যন্ত যখন কিংস অ্যারেনায় নিজেদের অপরাজিত রাখার পথে বাংলাদেশ, তখনই গোল খেয়ে ফিলিস্তিনের সঙ্গে আবারও হার। এবার ব্যবধানটা ১-০ গোলে। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে পরপর দুই ম্যাচে ফিলিস্তিনের কাছে হারল বাংলাদেশ। ২১ মার্চ হারের ব্যবধান ছিল ৫-০ গোলে, আজ হারের ব্যবধান ১-০।

কুয়েতে যে একাদশ নিয়ে বিধ্বস্ত হয়েছিল বাংলাদেশ, সেই একাদশ থেকে আজকে পরিবর্তন হয়েছে দুটি। মিডফিল্ডে মো. সোহেল রানার পরিবর্তে একাদশে অভিজ্ঞ সোহেল রানা, যিনি আগের ম্যাচে কার্ডের কারণে দলে ছিলেন না। একাদশ থেকে বাদ পড়েন ইসা ফয়সাল, তার জায়গায় দলে সেন্টার ব্যাক শাকিল হোসেন। আর ফিলিস্তিন একাদশে পরিবর্তন ছিল তিনটি।

কিংস অ্যারেনায় শুরুটা হলো যুদ্ধংদেহী। কুয়েতে ৫ গোলে হারার ক্ষোভ থেকে একটু বেশিই তেতে ছিল স্বাগতিক বাংলাদেশ। ১০ মিনিটের মধ্যে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখলেন বিশ্বনাথ ঘোষ। ফিলিস্তিনি ডিফেন্ডার মোহামেদ রশিদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়ালেন রাকিব হোসেন।

শক্তিতে বহু গুণ এগিয়ে থাকা ফিলিস্তিনিই যথারীতি আক্রমণে এগিয়ে। ১২ মিনিটে মোহামেদ রশিদের ফ্রি-কিক কোনোরকমে ঠেকালেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল মারমা।

বাংলাদেশের প্রথম সুযোগটা উড়িয়ে দিল ২২ মিনিটে। নিজেদের অর্ধ থেকে তপু বর্মণের উড়িয়ে দেওয়া বল ফয়সাল আহমেদ ফাহিম নিয়ন্ত্রণে নিলেন, বল নিয়ে বক্স অব্দি। রাকিব হোসেন এগোচ্ছেন দেখে ফাহিম এমন পাস বাড়ালেন যে বল টাচ লাইনের বাইরে!

জামাল ভূঁইয়াও একবার পরীক্ষা নিলেন ফিলিস্তিনের রক্ষণের। ৩২ মিনিটে ২৫ গজ দূর থেকে নিলেন বেশ ভালো এক ফ্রি-কিক। শট ভালো হলেও অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট।

৩৮ মিনিটে দারুণ এক সেভে বাংলাদেশের জাল বাঁচিয়েছেন গোলরক্ষক মিতুল মারমা। মুসাব বাত্তাতের ফ্রি-কিক থেকে পোস্টে হেড রেখেছিলেন আগের ম্যাচের জোড়া গোলদাতা শিহাব কুম্বোর। মিতুল বলের লাইনেই ছিলেন, ঠেকিয়ে দেন শট। প্রথমার্ধে ম্যাচের সেরা সুযোগটা নষ্ট করেছেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। ৪৪ মিনিটে মিতুলের বাড়ানো বলে রাকিবের হেড থেকে জামাল বল পান মাঝমাঠে। ক্ষিপ্রগতিতে বল বাড়ান বক্সের মুখে থাকা ফাহিমের পায়ে। ফাহিমের সামনে ছিলেন কেবল ফিলিস্তিন গোলরক্ষক রামি হামাদা। কিন্তু ফাহিম সেই শট মেরে বসেন গোলরক্ষকের গায়ে! গোল পেলে প্রথমার্ধে স্বস্তি নিয়ে বিরতিতে যেতে পারত বাংলাদেশ।

বিরতির পরপরই মিতুল মারমার ভুলে গোল প্রায় হজম করে বসেছিল বাংলাদেশ। ৪৮ মিনিটে শাকিল হোসেনের ব্যাক পাসে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে উল্টো ওদেহ দাবাঘের পায়ে তুল দেন মিতুল। বাংলাদেশের পোস্ট প্রায় অরক্ষিত। দাবাঘ আগের ম্যাচে হ্যাটট্রিক পেয়েছিলেন, আজকের ম্যাচেও ঠান্ডা মাথায় শট জালে সহজ এক সুযোগ নষ্ট করে বসলেন। এ যাত্রায় রক্ষা বাংলাদেশের।

৫৮ মিনিটে মিতুল আরেক দফা বাঁচান বাংলাদেশকে। মাহমুদ ধাধার শট দাবাঘের হেড ফিস্ট করে ফিরিয়ে দেন তিনি। ৬৫ মিনিটে আলাদিন হাসানের আরেকটি দূরপাল্লার শটও ঠেকান মিতুল। ৭৪ মিনিটে কর্নারের বিনিময়ে ফিলিস্তিনের ওদেহ খারুবের শট ফেরান বিশ্বনাথ ঘোষ।

ফিলিস্তিনকে একের পর এক গোলবঞ্চিত মিতুল শেষ দিকে এসে পড়েন চোটে। ম্যাচ শেষ হওয়ার যখন বাকি ৬ মিনিট, মিতুলকে মাঠ ছাড়তে হয় স্ট্রেচারে। অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে নেওয়া হয়েছে হাসপাতালে। বদলি গোলরক্ষক হিসেবে মাঠে নামেন মেহেদী হাসান শ্রাবণ।

যোগ করা সময়ে ইসা ফয়সালের পাসে ফিলিস্তিন গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান রাকিব। কিন্তু রাকিব শট নেওয়ার আগেই গোলরক্ষক ফেরান সেই শট। রাকিব পড়ে যান মাটিতে। রাকিবকে জোর করে মাঠ থেকে সরাতে গিয়ে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন ফিলিস্তিনের আমেদ মাহাজনেহ।

ফিলিস্তিনের এক ফুটবলার কমতেই মনোযোগ হারায় বাংলাদেশ। ১০ জন দলের নিয়েই শেষ সময়ে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন ফিলিস্তিনি ডিফেন্ডার মাইকেল তেরমানি। ৯৪ মিনিটে মুসাব বাত্তাতের শট থেকে মাহমুদ ধাধার হেডে একদম ফাঁকায় বল পান তেরমানি। তাঁকে ঠেকানোর কেউ ছিল না। এগিয়ে এসেছিলেন বদলি গোলরক্ষক শ্রাবণ। কিন্তু বাংলাদেশের হার এড়াতে পারেননি।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments