Sunday, April 28, 2024
spot_img
Homeঅর্থনীতিমন্দার পুঁজিবাজারে বাড়ছে দেশি বিনিয়োগকারী, কমছে বিদেশি

মন্দার পুঁজিবাজারে বাড়ছে দেশি বিনিয়োগকারী, কমছে বিদেশি

প্রায় দেড় মাস ধরে মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশের পুঁজিবাজার। প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমছে। এতে বিনিয়োগ করা পুঁজি হারাচ্ছেন লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। সার্বিক শেয়ারবাজারে মন্দা বিরাজ করলেও প্রতিনিয়ত বাজারে যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন বিনিয়োগকারী। তবে এই বিনিয়োগকারীদের পুরোটাই স্থানীয়। বিপরীতে প্রবাসী বা বিদেশি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমছে।

চলতি মার্চ মাসের প্রথম ২৫ দিনে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব বেড়েছে প্রায় আড়াই হাজার। অথচ এই সময়ের মধ্যে প্রবাসী বা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমেছে ২৪টি। অর্থাৎ দেশের পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বাড়লেও কমেছে বিদেশি বিনিয়োগকারী।

বিও হলো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের জন্য ব্রোকারেজ হাউস অথবা মার্চেন্ট ব্যাংকে একজন বিনিয়োগকারীর খোলা হিসাব। এই বিও হিসাবের মাধ্যমেই বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে লেনদেন করেন। বিও হিসাব ছাড়া শেয়ারবাজারে লেনদেন করা সম্ভব না।

বিও হিসাবের তথ্য রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড (সিডিবিএল)। সিডিবিএলের তথ্যানুযায়ী, ২৫ মার্চ শেষে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৫টি। যা ফেব্রুয়ারি মাস শেষে ছিল ১৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮৩টি। এ হিসাবে মার্চ মাসের ২৫ দিনে বিও হিসাব বেড়েছে ২ হাজার ৩১২টি।

 

সিডিবিএল বলছে, বর্তমানে দেশি বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব আছে ১৭ লাখ ১৪ হাজার ৫২৫টি। যা ফেব্রুয়ারি শেষে ছিল ১৭ লাখ ১২ হাজার ২৬০টি। অর্থাৎ দেশি বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ২ হাজার ২৬৫টি।

অন্যদিকে বর্তমানে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব আছে ৫৫ হাজার ৩৫১টি। ফেব্রুয়ারি শেষে এই সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৩৭৫টি। অর্থাৎ চলতি মাসের ২৫ দিনে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব কমেছে ২৪টি।

বর্তমানে শেয়ারবাজারে যে বিনিয়োগকারীরা আছেন, তার মধ্যে পুরুষ বিনিয়োগকারীদের নামে বিও হিসাব আছে ১৩ লাখ ৩৮ হাজার ১২টি। ফেব্রুয়ারি শেষে এই সংখ্যা ছিল ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ১৩৬টি। অর্থাৎ পুরুষ বিনিয়োগকারীদের হিসাব বেড়েছে ১ হাজার ৮৭৬টি।

অন্যদিকে বর্তমানে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৬৪টিতে। ফেব্রুয়ারি শেষে এ সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৩১ হাজার ৪৯৯টি। এ হিসাবে নারী বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাব বেড়েছে ৩৬৫টি।

এদিকে বর্তমানে কোম্পানি বিও হিসাব রয়েছে ১৭ হাজার ৪১৯টি। ফেব্রুয়ারি শেষে এ সংখ্যা ছিল ১৭ হাজার ৩৪৮টিতে। সে হিসাবে কোম্পানি বিও হিসাব বেড়েছে ৭১টি।

বর্তমানে বিনিয়োগকারীদের যে বিও হিসাব আছে তার মধ্যে একক নামে আছে ১২ লাখ ৫৫ হাজার ২৩৭টি, যা ফেব্রুয়ারি শেষে ছিল ১২ লাখ ৫৩ হাজার ৩১টি। অর্থাৎ একক নামে বিও হিসাবে বেড়েছে ২ হজার ২০৬টি।

অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের যৌথ নামে বিও হিসাব আছে ৫ লাখ ১৪ হাজার ৬৩৯টি। ফেব্রুয়ারিতে যৌথ বিও হিসাব ছিল ৫ লাখ ১৪ হাজার ৬০৪টি। অর্থাৎ চলতি মাসের প্রথম ২৫ দিনে যৌথ বিও হিসাব বেড়েছে ৩৫টি।

এদিকে, প্রায় দেড় মাস ধরে মন্দার মধ্যে রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। অব্যাহত দরপতনের মধ্যে পড়ে এরই মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৯২ হাজার কোটি টাকার ওপরে নেই হয়ে গেছে। আর ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমেছে ৬১৩ পয়েন্ট। লেনদেন কমে তিনভাগের এক ভাগে চলে এসেছে।

 

গত ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ছিল ৬ হাজার ৪৪৭ পয়েন্টে। ধারাবাহিক দরপতনের মধ্যে পড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক এখন ৫ হাজার ৮৩৪ পয়েন্ট নেমে গেছে। অর্থাৎ দেড় মসের মধ্যে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমছে ৬১৩ পয়েন্ট।

একইভাবে ১১ ফেব্রুয়ারি ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ৭৫ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এখন সেই বাজার মূলধন কমে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকায় নেমে গেছে। অর্থাৎ এসময়ে বাজার মূলধন হারিয়েছে ৯২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা।

অন্যদিকে, চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টানা ১১ কার্যদিবসে ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। তার মধ্যে ১১ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৫২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। তার আগের কার্যদিবস ৮ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয় ১ হাজার ৮৫৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

অথচ এখন সেই লেনদেন চারশো কোটি টাকর ঘরে চলে এসেছে। সর্বশেষ ২৫ মার্চ ডিএসইতে ৪৪৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে শেষ ছয় কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবস লেনদেন থাকলো চারশো কোটি টাকার ঘরে।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments