Wednesday, May 8, 2024
spot_img
Homeমতামতমাহে রমজান ও নাজাত

মাহে রমজান ও নাজাত

রমজান হলো পাপমুক্তির মাস; কল্যাণের মাস। এ মাসে মহান আল্লাহতায়ালার অনুগ্রহ লাভ করাই মুমিনের আরাধ্য। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে রহমত ও মাগফেরাত শেষে এখন নাজাতের সময়। বান্দা জাহান্নামের পথ থেকে বেরিয়ে আসবে; জান্নাতের পথে ধাবিত হবে; নেক আমল করবে। পাপের প্রতি তার কোনো আকর্ষণ থাকবে না। নাজাতের এই সময়ে অর্জিত শিক্ষাকে ধারণ করেই বছরের বাকিটা সময় কাটিয়ে দেবে একজন মুমিন মুসলমান। নেক আমল ও দ্বীনের হেকমত দিয়ে সে শয়তানকে পরাভূত করবে। এভাবে রমজানের অর্জিত শিক্ষাগুলো কাজে লাগিয়ে জীবনকে করে তুলবে ছন্দময়।

নফসে আম্মারার কারণে মানুষ ধোঁকায় পড়ে। পাপ কাজ করে। এই অবাধ্য মানবসত্তার কাজই হলো মানুষকে খারাপের দিকে নিয়ে যাওয়া। এই মন্দ আত্মাকে সক্রিয় হতে দেওয়া যাবে না। আর একে দমন করার উপায় হলো বেশি বেশি নেক আমল করা। যখন মানুষ বেশি বেশি নেক আমল করবে, এই আত্মা মানুষের ওপর আর কোনো প্রভাব খাটাতে পারবে না। সে ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়বে। সুতরাং, নফসে আম্মারাকে পরাজিত করতে হলে মন্দের ডাকে সাড়া না দিয়ে কল্যাণের পথে চলতে হবে। ইসলামের অনুশাসন মানতে হবে। মানুষ অনেক সময় মন্দ কাজ করার পর অনুতপ্ত হয়। নিজের ভুল বুঝতে পারে। এর কারণ হলো মানুষের ভেতরকার নফসে লাউওয়ামা তথা অনুতপ্ত সত্তা তখন জেগে ওঠে। নফসে আম্মারা, শয়তানের ধোঁকা বা পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে সাময়িকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে এবং কারও দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মানুষ মন্দ কাজ করে বসতে পারে। কিন্তু এর রেশ কেটে গেলে সে অনুতপ্ত হয়। নফসে লাউওয়ামা তাকে বলে, হে মানব! তোর ওই কাজটি করা উচিত হয়নি। তুই অনুতপ্ত হয়ে তওবা-এস্তেগফার কর। আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নে।

নফস জগতে প্রশান্ত আত্মা হলো নফসে মুতমাইন্নাহ, যার আকর্ষণ থাকে নেক কাজের দিকে। সে সব সময় বান্দাকে ভালো কাজের দিকে ডাকে। মানুষের অন্তরে সার্বক্ষণিক এ নফসের প্রভাব ধরে রাখতে হলে তাকে আমলে সালেহের দিকে সব সময় রুজু থাকতে হবে। চিন্তা ও কর্মে ভালো হতে হবে। একবার নিজেকে এই আদলে গড়ে তুলতে পারলে এর বাইরে গিয়ে মন্দ কাজ করতে তার মোটেই ভালো লাগবে না।

ভালো-মন্দ নিয়েই মানুষ। তবে মন্দকে ঘৃণা করা একজন প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য। মহান আল্লাহ পাকের সান্নিধ্যই তার পরম চাওয়া। আর যে আল্লাহতায়ালার সান্নিধ্য লাভ করতে পারবে, আল্লাহ নিজেই তাকে সম্মানিত করবেন। তার সব ধরনের সুখের ব্যবস্থা তিনি করবেন। তাই নাজাতের এই ১০ দিনে মানুষের উচিত ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে যাবতীয় অন্যায়, অপরাধ ও জাহান্নামের শাস্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করে নেওয়া।

কেউই জানে না– দুনিয়ায় তার হায়াত কতদিন। সুতরাং ভবিষ্যতের জন্য নেক আমলের কাজটি ফেলে রাখা যাবে না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের হেফাজত করুন। সব ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার দৃঢ়তা দান করুন। আমাদের ইমানকে মজবুত করার সুযোগ দিন। পবিত্র মাহে রমজানের ফজিলত জেনে বেশি বেশি নেক আমল করার তাওফিক দান করুন। রমজানে নাজাত লাভের তাওফিক দান করুন।

অধ্যক্ষ ড. মোহাম্মদ শাহ জালাল: অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; আহ্বায়ক, সুফিবাদি নাগরিক

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments