Monday, May 20, 2024
spot_img
Homeঅর্থনীতিব্যাংকের এমডি হতে পারবেন কারা, যেসব সুযোগ-সুবিধা পাবেন তারা

ব্যাংকের এমডি হতে পারবেন কারা, যেসব সুযোগ-সুবিধা পাবেন তারা

৪৫ বছর বয়সের আগে কেউ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হতে পারবেন না। আর ৬৫ বছরের পরও এ পদে থাকা যাবে না। কাউকে এমডি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার সময় খেলাপি ঋণ আদায়ে পারদর্শিতা যাচাই করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। প্রথমবারের মতো এমন আরও কিছু শর্ত জুড়ে এমডিদের নিয়োগ, দায়দায়িত্ব ও সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কিত একটি নীতিমালা গতকাল মঙ্গলবার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, কেউ চাইলেই হঠাৎ করে পদত্যাগ করে ব্যাংক ছেড়ে যেতে পারবেন না। ব্যাংক কর্তৃপক্ষও ইচ্ছামতো এমডিকে সরিয়ে দিতে পারবে না। এবিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে ব্যাখ্যা দিতে হবে। কমিটির সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

এমডি হিসেবে নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ পেতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কমিটির কাছে মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে। এরপরই তাঁর নিয়োগ ও মেয়াদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। সব ব্যাংক এমডির চুক্তির মেয়াদ প্রতিবার সর্বোচ্চ তিন বছর হবে। যদিও ইতিমধ্যে বেশিরভাগ এমডিকে ৫ বছর বা আরও বেশি সময় পর্যন্ত নিয়োগ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নীতিমালায় আরও বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের অফসাইট বা অনসাইট পরিদর্শনে কোনো বিরূপ পর্যবেক্ষণ নেই, এমন ব্যক্তি এমডি হিসেবে নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগ পাবেন। ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের কোনো সদস্যের পরিবারের কেউ এমডি হতে পারবেন না। এমডি হতে হলে ২০ বছরের ব্যাংকিং অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

এমডিদের সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি বলেছে, এমডিরা সর্বোচ্চ দুটি উৎসব ভাতা পাবেন, যা এক মাসের মূল বেতনের বেশি হবে না। এমডিকে কোনো ক্লাবের জন্য চাঁদা, বিদেশে চিকিৎসা খরচ, পরিবারের সদস্যদের বিদেশে চিকিৎসা খরচ, পরিবারের সদস্যদের ভ্রমণ ভাতা দিতে পারবে না ব্যাংক। এমডির বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি হবে না, নববর্ষ ভাতা, ছুটি নগদায়নসহ অন্য সুবিধাও পাবেন না। তবে এমডিকে উৎসাহ বোনাস হিসেবে বছরে সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা দিতে পারবে ব্যাংক। ব্যাংকের অন্য কোনো কর্মকর্তাকে এর চেয়ে বেশি উৎসাহ বোনাস দেওয়া যাবে না।

এমডিকে জোরপূর্বক অব্যাহতি দেওয়া বন্ধ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ জন্য মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে অপসারণ করতে চাইলে তার সুনির্দিষ্ট কারণসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জানাতে হবে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা অনুমোদন করলে এক মাস পর সেটি কার্যকর হবে। আবার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে কোনো এমডি পদত্যাগ করতে চাইলে পর্ষদের সুপারিশসহ পদত্যাগপত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কমিটি ওই এমডির শুনানি গ্রহণ করে যে সুপারিশ করবে, সেটিই চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।

বিদেশি ব্যাংকের এমডি নিয়োগেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। তবে বিদেশি ব্যাংকের এমডি পদে নিয়মিত কোনো কর্মকর্তা দায়িত্বে থাকলে তাঁকে ওই ব্যাংকের নিজস্ব নিয়মে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, উৎসাহ বোনাস, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটিসহ অন্য সুবিধা দিতে পারবে বিদেশি ব্যাংকগুলো।

পর্ষদের কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত ব্যাংকের জন্য ক্ষতিকর মনে হলে এমডিকে তা লিখিত বা মৌখিকভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জানাতে হবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একজন উপযুক্ত, পেশাগতভাবে দক্ষও অভিজ্ঞ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ হওয়া আবশ্যক। ব্যাংকের পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আগের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবসায়িক ও প্রযুক্তিগত ঝুঁকি মোকাবিলায় এখন অধিকতর চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে ব্যাংকের এমডি বা সিইও নিয়োগের বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশনা জারির প্রয়োজন হয়েছে।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments