Sunday, May 12, 2024
spot_img
Homeসারাদেশফরিদপুর শহরের বেইলি সেতুতে ফের চাঁদাবাজি

ফরিদপুর শহরের বেইলি সেতুতে ফের চাঁদাবাজি

ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার ও নিউমার্কেটের সংযোগ স্থাপনকারী কুমার নদের ওপর বেইলি সেতু ঘিরে আবারও চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। সেতুর দুই পাশের ফুটপাতে হকার বসিয়ে প্রতিদিন জনপ্রতি ৭০ থেকে একশ টাকা পর্যন্ত চাঁদা তুলছে অন্তত ৪টি গ্রুপ। হকারদের কারণে এরই মধ্যে সংকুচিত হয়ে পড়েছে সেতুতে চলাচলের রাস্তা। ফলে পথচারীদের চলাচলে চরম বাধার সৃষ্টি হচ্ছে।

লোহার ব্রিজ নামে পরিচিত এই বেইলি সেতু দিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষ নদের এপার-ওপার যাতায়াত করেন। আবার বাইরের থেকে আসা হাজার হাজার মানুষ শহরের প্রবেশমুখে নেমে শরীয়তুল্লাহ বাজার হয়ে হেঁটে নিউমার্কেট, চকবাজার, থানার মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করেন এই সেতু দিয়ে। দু’মাস আগে প্রশাসনের উদ্যোগে পথচারীদের হয়রানি বন্ধে হকারমুক্ত করা হয় সেতুটি। কিন্তু রমজানের শুরুতেই আবার সেতু চলে গেছে হকারদের দখলে।

বুধবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায়, সেতুর দুই পাশের ফুটপাতজুড়ে নানা পণ্যের পসরা নিয়ে বসেছে হকাররা। একাধিক হকার জানায়, ফুটপাতে বসতে তাদের প্রতিদিন জনপ্রতি ৭০ থেকে ১০০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। চাঁদা উত্তোলনকারীরাই তাদের সেতুর দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে বসতে সাহায্য করে।

হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার কমিটির একাধিক ব্যক্তি জানান, স্থানীয় জয় জিহাদ, শেখ জনি ও আলিপুরের মিঠু কাঁচাবাজার ইজারা নিয়েছে। এরাই ইচ্ছামতো তাদের লোকজন বসিয়ে সেতুর পরিবেশ নষ্ট করছে। এই তিনজনই চাঁদাবাজদের চারটি গ্রুপ নিয়ন্ত্রণ করছে। এর মধ্যে জয় র্যা বের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত আলিপুরের সন্ত্রাসী মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে। জনি র্যা বের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত আলিপুরের সন্ত্রাসী ল্যাংড়া সেলিমের ভাই। জনির ভাই শেখ মিন্টু বাজার কমিটির লাইন সেক্রেটারি। এ ব্যাপারে জানতে শেখ মিন্টুকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

দুই মাস আগে যখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বেইলি সেতুসহ আশপাশ এলাকা হকারমুক্ত করা হয়, তখন হাকারদের পক্ষ নিয়ে প্রকাশ্যে বিভিন্ন জনসভায় বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইশতায়াক আরিফ। এ ব্যাপারে তাঁর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরাও চাই না বেইলি সেতু হকারদের দখলে চলে যাক। তবে হকারদের পুনর্বাসন হওয়া দরকার।’

হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুর ইসলাম মোল্লা বলেন, ‘সেতুকে হকারমুক্ত করতে আমরা বহু চেষ্টা করে বারবার ব্যর্থ হচ্ছি। পথচারীদের অসুবিধা করে হকাররা সেতু ও রাস্তার দুই পাশে বসে যাচ্ছে। এতে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, পথচারীরাও বিভিন্ন সমস্যার শিকার হচ্ছে।’

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান বলেন, দীর্ঘদিন চেষ্টা করে আমরা বেইলি সেতু দখলমুক্ত করতে পেরেছিলাম। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সেতুর ওপর বসার চেষ্টা করছে। শুধু পুলিশের একার পক্ষে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। সব পক্ষের সম্মিলিত পদক্ষেপ ও সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করা জরুরি। রমজানে যাতে কোনো মানুষের ভোগান্তি না হয় সেটা খেয়াল রাখবে পুলিশ। ফরিদপুরের কোতোয়ালি পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ ও ডিবি পুলিশ সমন্বিতভাবে এসপির নির্দেশে জনগণের স্বাভাবিক ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments