Friday, May 10, 2024
spot_img
Homeসারাদেশএবার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে নজর কাড়ল সেই পুতুল নাচের দল

এবার স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে নজর কাড়ল সেই পুতুল নাচের দল

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেই পুতুল নাচের দল এবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে নেচেছে। তবে গানে রয়েছে পরিবর্তন। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক গান দিয়ে নতুন পরিবেশনা দেখিয়েছে জীবন্ত পুতুলের দলটি।

সরেজিমেন দেখা যায়, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিয়াজ মোহাম্মদ স্টেডিয়ামে চলছিল কুচকাওয়াজ। তা শেষ হওয়ার পর শুরু বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ডিসপ্লে। তবে দর্শকদের বিশেষ আগ্রহ ছিল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া মানব পুতুল নাচের দলের দিকে। একপর্যায়ে লাল বেনারশি শাড়িতে পুতুলের সাজে সবার সামনে উপস্থিত হয় মানব পুতুলের দলটি। শুরু হলো নাচ। এ যেন জীবন্ত পুতুল নেচে যাচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। তবে নাচের প্রশিক্ষক মো. আল সাইফুল আমিন (জিয়া) গানে এনেছিলেন পরিবর্তন। মানব পুতুলের দলটি নেচেছে দেশাত্মবোধক ‘দে তালি বাঙালি’ গানে। ৩ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের নাচটি সকলের মনে এনে দিল আনন্দ।

নাচ দেখতে আসা দর্শক জোনিয়া বেগম ও মুসলিমা আক্তার জানান, ইন্টারনেটে ভাইরাল হওয়া মানবরূপী পুতুল দলের নাচ দেখার আগ্রহ ছিল অনেক। জানতে পারলাম স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দলটি আসবে। তাই সকাল থেকে অধীর আগ্রহে ছিলাম দলটির নাচ দেখার জন্য। তারা যখন নাচ শুরু করল তখন মনে হচ্ছিল জীবন্ত পুতুলের নাচ দেখছি। ভালো লাগলো নাচটি দেখে।

নাচে অংশগ্রহণকারীদের অভিভাবকরা জানান, নিজের সন্তানদের এমন নাচ দেখবে সেটা কখনোই এমনটা ভাবেননি। তাদের কাছে এখন প্রশংসার পাত্র প্রশিক্ষক মো. আল সাইফুল আমিন জিয়া। পুতুলের আদলে নাচটি কোরিওগ্রাফ করে তাদের সন্তানদের দেশবাসীর কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ আল সাইফুল আমিন জিয়া বলেন, ছোটবেলায় পুতুল নাচ দেখতাম। আমি ভাবলাম একজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সন্তান ও সাংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে বিলুপ্ত হতে থাকা পুতুল নাচের জৌলুসকে আবারো আনবো। নতুন প্রজন্মকে পুতুল নাচের সাথে পরিচিত করার ভাবনা থেকেই এই পুতুল নাচটি তৈরী করি। আমার প্রদর্শিত পুতুলের আদলে শিশুদের নৃত্যটি দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হওয়ায় আমি অনেক খুশি।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা পপি জানান, সংস্কৃতির রাজধানী ব্রাহ্মণবাড়িয়া। আর এই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্য পুতুল নাচ। তবে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় পুতুল নাচের এই ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি আলোচিত মানব পুতুল নাচের দলটি আবারো সেই সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে নতুনভাবে উপস্থান করেছে। জেলা প্রশাসন এই দলটিকে পৃষ্ঠপোষকতা করবে। তাছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার হারিয়ে যাওয়া সংস্কৃতিগুলো আবারো নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে আনা যায় সেজন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সূর্যমুখী কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড গার্লস হাই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মানবরূপী পুতুল নাচের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সূর্যমুখী কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষক ও নৃত্য প্রশিক্ষক মো. আল সাইফুল আমিন জিয়া তার ‘মেহেক জিয়া’ নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ভিডিও প্রকাশ করেন। ভিডিওটি রীতিমতো ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই সেই ভিডিওটি কপি করেও ফেসবুকে শেয়ার করেন। দেশের বেশিরভাগ গণমাধ্যমেও খবর প্রকাশিত হয়। নেট দুনিয়ায় ব্রাহ্মণাবাড়িয়ার মানব পুতুল নাচের প্রশংসা করেন অনেকে। এতে বিশেষ আমন্ত্রণে গত ১৮ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মানব পুতুলের দলটি নাচ পরিবেশনা করে বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা, পুরস্কার প্রদান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় দলটিকে।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments