Thursday, May 9, 2024
spot_img
Homeক্যাম্পাসবুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গুজব ও অপপ্রচার চালাচ্ছে ছাত্রলীগ: আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গুজব ও অপপ্রচার চালাচ্ছে ছাত্রলীগ: আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা

বুয়েটে চলমান নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবি ও ছাত্ররাজনীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টরা গুজব ও অপপ্রচারের চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বুয়েটের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

আজ রোববার সকালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছেন তারা।

বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, সম্প্রতি মিডিয়ায় বুয়েটের আন্দোলনরত বিপুলসংখ্যক সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টরা। আমরা আবারও সাফ জানিয়ে দিতে চাই আমাদের অবস্থান কেবল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে নয়।

তারা জানান, বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ায় এখানে শিক্ষার্থীরা যেকোনো রাজনৈতিক সংগঠনের কর্মকাণ্ডের বিরোধী। এ কারণে ক্যাম্পাসের ভেতরে রাজনৈতিক চর্চায় জড়িতদের বিরোধিতা করে আসছে। বুয়েটের বাইরে বুয়েটের কোনো শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত রাজনৈতিক কার্যকলাপের জন্য তাদের শাস্তি চাওয়া হচ্ছে না বরং তাদের শাস্তি চাওয়া হচ্ছে ওই দিন রাতে ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় নিয়ম অমান্য করে বুয়েটের ভেতরে রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে অনুপ্রবেশ করার জন্য।

রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে ক্যাম্পাসে, হলে কিংবা ক্লাসে কারও ওপর কোনো রকম নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি বলে জানান তারা। বুলিংসহ নির্যাতনের অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে মিথ্যাচার বলে দাবি করেন তারা।

তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ছাত্ররা যদি রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে ক্ষমতা প্রদর্শন করে ক্যাম্পাসে অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে পারে তাহলে অতিসত্বর বুয়েটে সম্পূর্ণ গতিতে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করা কেবল সময়ের ব্যাপার- এ আশঙ্কা থেকেই এ আন্দোলন।

আন্দোলনরত বুয়েট শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ মনে প্রাণে ধারণ করে উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় দিবসগুলোতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপক উদ্‌যাপন ও অংশগ্রহণ এবং সম্যকভাবে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতিই এর প্রমাণ। এটি প্রমাণ করার জন্য আবরার ফাহাদের মৃত্যুর পর ক্যাম্পাসের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর সিদ্ধান্তকে অবমাননা করে দলীয় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি করার প্রয়োজন নেই।

ছাত্রলীগের পাশাপাশি সকল দল ও সংগঠনের সাংগঠনিক রাজনীতির বিরুদ্ধে বুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ছাত্রদল যখন ২০২১ সালে আহ্বায়ক কমিটি দেয় তখন তীব্র আন্দোলন হয়। কিন্তু সেই কমিটির সবাই প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিধায় কর্তৃপক্ষের তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার উপায় ছিল না।

বুয়েটে হিজবুত তাহরীর এবং অন্যান্য ধর্মীয় সংগঠনের কার্যক্রম প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীরা বলেন, হিজবুত তাহরীর কোনো রাজনৈতিক দল না বরং নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন। এদের কর্মকাণ্ড আমরা ক্যাম্পাসে দেখতে পাই বহিরাগতদের (সিসি ফুটেজ অনুযায়ী) লাগানো বিভিন্ন পোস্টার, মেইল বা প্রচারপত্র ইত্যাদির ভিত্তিতে। তাদের পরিচয় সম্পর্কে আমরা স্পষ্ট না। আমাদের ইন্সটিটিউশনাল মেইলে হিজবুত তাহরীর সংক্রান্ত মেইল দেখার পর অনতিবিলম্বে সর্বপ্রথম ডিএসডাব্লিউ স্যারকে ভার্চুয়ালি এই মর্মে ইনফর্ম করা হয়, আমাদের আন্দোলনরত এ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই। এ ব্যাপারে ডিএসডাব্লিউ স্যারের কাছে যথাযথ পদক্ষেপ আহ্বান করা হয়। পরবর্তীতে ভিসি স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে অগ্রগতি জানতে চাওয়া হলে স্যার জানান, এ ব্যাপারে বুয়েট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এর আগেও বিগত ব্যাচের শিক্ষার্থীদের এদের বিরুদ্ধে পুলিশে অবহিত করার রেকর্ড আছে। আমরা হিজবুত তাহরীরের নিঃসন্দেহে সম্পূর্ণ বিপক্ষে এবং এ জাতীয় অপশক্তির উত্থান যেন বুয়েটে না হয় এ জন্য আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

শিক্ষার্থীরা জানান, বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র-রাজনৈতিক কর্মকান্ডের চর্চা নিষিদ্ধ। কমিটি দেওয়া ছাড়াও ক্যাম্পাসে শোডাউন, রাজনৈতিক সংগঠনের জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া রাতে ক্যাম্পাসে প্রবেশ যেখানে বুয়েট শিক্ষার্থীদের জন্য নিষিদ্ধ সেখানে ৩টায় একটা রাজনৈতিক সংগঠনের নেতার দলেবলে প্রোগ্রাম করা অবশ্যই একটা অস্বাভাবিক ঘটনা এবং সাংগঠনিক রাজনীতির প্রভাবে ঘটা ঘটনা।

তারা বলেন, দফায় দফায় প্রতিবাদ জানানোর পরও ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টরা বুয়েটের শিক্ষার্থীদের অরাজনৈতিক ক্যাম্পাসের ইচ্ছাকে সম্মান না করে বুয়েট ক্যাম্পাসে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনার নানারকম উদ্যোগ নিয়েছে। ক্রমাগত অসন্তোষ এখন তীব্র আন্দোলনে রূপ নিয়েছে শুধুমাত্র একটি নিরাপদ ক্যাম্পাস চাওয়ার দাবি থেকেই। তাই আমরা সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি ভুল প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য। আমরা শপথ করছি সকল রাজনৈতিক ও নিষিদ্ধ সংগঠন থেকে বুয়েটকে মুক্ত রাখার। আমরা আবরার ফাহাদ ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।

রোববার সকাল ৭ টা থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবস্থান নেওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছাত্রলীগের অবস্থান কর্মসূচি থাকায় শিক্ষার্থীরা আজ অবস্থান নেননি। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হোক তা তারা চান না। তবে বিকেল ৩টায় সামগ্রিক বিষয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করবেন।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments