Thursday, May 9, 2024
spot_img
Homeবিশ্বজার্মানিতে ২০ হাজার হাতি পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি বতসোয়ানার

জার্মানিতে ২০ হাজার হাতি পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি বতসোয়ানার

জার্মানিতে ২০ হাজার হাতি পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট। মূলত দেশটিতে হাতি শিকারের ওপর জার্মান বিধিনিষেধের কারণে সৃষ্ট রাজনৈতিক বিরোধের জেরে এই হুমকি দিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাতি শিকারের পর তা থেকে প্রাপ্ত আইভরি, চামড়া ও মাংস বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করত বতসোয়ানা। কিন্তু চলতি বছরের শুরুতে জার্মানিতে এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়।

জার্মানির এই বিধিনিষেধ বতসোয়ানার অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, দেশটির আয়ের একটি অংশ আসে এই হাতি-সংক্রান্ত খাত থেকে। বতসোয়ানায় বিশ্বের এক-তৃতীয়াংশ হাতির বাস। সংখ্যার বিচারে দেশটিতে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার হাতি আছে। পরিবেশ ও প্রাণিবিজ্ঞানীদের মতে, দেশটিতে হাতির সংখ্যা বেড়ে গেলে বিদ্যমান বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়তে পারে।

ফলে বতসোয়ানা সরকার প্রায়ই হাতি শিকারে উৎসাহিত করে থাকে। একই সঙ্গে এই বিষয়টি দেশটির বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান ও আয়ের উৎসও বটে। বিষয়টি আমলে নিয়ে বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট মোকগউইৎসি মাসিসি জার্মান গণমাধ্যম বিল্ডকে জানিয়েছেন, জার্মানির এই বিধিনিষেধ বতসোয়ানার মানুষের দারিদ্র্যের কারণ হতে পারে।

বতসোয়ানার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিভিন্ন সংরক্ষণ প্রকল্পের জন্য বতসোয়ানায় হাতির সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। শিকার করার মাধ্যমেই কেবল হাতির সংখ্যা খানিকটা নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে।’ প্রেসিডেন্ট মাসিসি আরও বলেন, ‘জার্মানরা যেভাবে আমাদের বন্য প্রাণীর সঙ্গে থাকতে বলে, তাদেরও সেভাবেই বসবাস করা উচিত।’

এ সময় তিনি হাতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ২০ হাজার জার্মানিতে পাঠানোর কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বতসোয়ানা জার্মানিকেও এমন উপহার দিতে চায়। এখানে কোনো মশকরা করা হচ্ছে না ও উপহার গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি (জার্মানদের কাছ থেকে) না শুনতে চান না।’

হাতির পালের জন্য বতসোয়ানায় বিপুল পরিমাণ ফসলি ও কৃষিজমির ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয়রা পদদলিত হয়ে আহত হচ্ছে, মারা যাচ্ছে। এর আগে, হাতির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে দেশটি প্রতিবেশী অনেক দেশকেই বিপুলসংখ্যক হাতি পাঠিয়েছে। অ্যাঙ্গোলাকে প্রায় ৮ হাজার হাতি দেওয়া হয়েছে। আরেক প্রতিবেশী দেশ মোজাম্বিকেও শতাধিক হাতি পাঠানো হয়েছে।

বতসোয়ানা ২০১৪ সালে বন্য প্রাণী শিকারে নিষেধাজ্ঞা দেয়। কিন্তু স্থানীয়দের চাপে ২০১৯ সালে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। বর্তমানে দেশটিতে নির্দিষ্ট কোটায় শিকারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি লাইসেন্সধারীদের জন্য কঠোর নিয়ন্ত্রণের মধ্য দিয়ে করা হয়।

হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনালের ২০২১ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে আফ্রিকান হাতির দেহাবশেষের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক দেশ জার্মানি। বার্লিনে দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, বতসোয়ানা এখনো বিধিনিষেধের বিষয়ে জার্মানির কাছে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments