ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেছে প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল জাতীয় কংগ্রেস। আজ শুক্রবার কংগ্রেসের সদর দপ্তরে দলীয় নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে।
ইশতেহারে বিদেশ নীতি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ভারতের প্রতিবেশীদের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও আরও জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ইশতেহার ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন সোনিয়া গান্ধী ও রাহুল গান্ধী। এ ছাড়া কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কংগ্রেসের ইশতেহার প্রসঙ্গে কলকাতার রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুমন ভট্টাচার্য বলেন, আজকের বাংলাদেশ রাষ্ট্র গঠনের পেছনে ইন্দিরা গান্ধী ও কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ, সে দেশের শাসকদল এবং প্রধানমন্ত্রী বারবার সেই কথা বলেন। সেই কারণেই শেখ হাসিনা দিল্লিতে এলে সব সময় রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। এদিকে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিভিন্ন মন্তব্য অনেক সময়ই বাংলাদেশের মানুষকে আহত করেছে। অমিত শাহের বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকারী সম্পর্কে ‘উইপোকা’ মন্তব্য নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছিল। তাই কংগ্রেসের ইশতেহারে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নতির কথা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
গত জানুয়ারিতে ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’য় রাহুল জানিয়েছিলেন, তাঁর এই যাত্রা পাঁচটি ন্যায়ের ওপরে দাঁড়িয়ে—মহিলা, তরুণ, কৃষক, শ্রমিক এবং ভাগীদারি বা জনসংখ্যা অনুযায়ী ক্ষমতায় অংশগ্রহণের ন্যায়ের দাবি। সেই ন্যায়ের অঙ্গীকারের সঙ্গে সংগতি রেখেই তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইশতেহার। সেখানে কৃষকদের ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের জন্য আইনি অধিকার নিশ্চিত করার কথা। এ ক্ষেত্রে কৃষিবিজ্ঞানী এম এস স্বামীনাথনের নেতৃত্বাধীন কমিটির সুপারিশ মেনে পদক্ষেপের কথাও এদিন জানান কংগ্রেস সভাপতি জানিয়েছেন মল্লিকার্জুন খাড়গে।
শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে পরিকাঠামো উন্নয়ন কর্মসূচি চালুর কথাও ইশতেহারে উল্লেখ করা হয়েছে। ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, কেন্দ্রে ক্ষমতা দখল করলে জম্মু ও কাশ্মীরের পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
শুধু তা-ই নয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জমানায় চালু করা অস্থায়ী ‘অগ্নিবীর’ নিয়োগ কর্মসূচি বাতিল করে সেনাবাহিনীতে স্থানীয় নিয়োগ কর্মসূচি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে ইশতেহারে।