Sunday, April 28, 2024
spot_img
Homeরাজনীতিইফতার মাহফিলে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে, মানতে পারছি না : খসরু

ইফতার মাহফিলে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে, মানতে পারছি না : খসরু

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশে ইফতার মাহফিল হবে কি হবে না সেটা এখন প্রশ্ন করা হচ্ছে। কোন দেশে আছি চিন্তা করেন। ইফতার মাহফিলে নাকি কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে, মানতে পারছি না। লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। ব্যাংক খালি হয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষ দুই বেলা খেতে পারছে না। এ জন্য আমি বলেছি ইফতার মাহফিল বেশি বেশি করতে হবে। প্রতিদিন প্রতিটি এলাকায় করতে হবে।

মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) কাজীর দেউরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে পবিত্র মাহে রমজান ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু বলেন, ইফতার মাহফিল নিয়ে প্রশ্ন উঠবে সেটা বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না। গরুর মাংস সরবরাহ করা যাবে না বলেও অনেক জায়গায় নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। চিন্তা করে দেখেন বাংলাদেশ কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনৈতিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সব তো কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এখন আমার খাওয়া দাওয়ার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমি গরুর মাংস খাব নাকি ইফতার খাব সেটাও তাদের সিদ্ধান্ত দিতে হবে কেন?

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনের ধর্মীয় অনুভূতি, খাওয়া-দাওয়ার মধ্যে হাত দিতে গেলে অসুবিধে আছে। বাংলাদেশের মানুষ এটা গ্রহণ করবে না। আজ ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, যার ডাকে বাংলাদেশের মানুষ উজ্জীবিত হয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যার যা ছিল হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল।

‘আর যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বলে তাদের বেশিরভাগ লোক ভারতে পালিয়ে গিয়েছিল সেদিন। যুদ্ধক্ষেত্রে ছিল বাংলাদেশের সৈনিক, যুবক ও মুক্তিকামী যোদ্ধারা। জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে শুধু শেষ করেননি। সম্মুখ সারিতে যুদ্ধ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করেছিলেন। কেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা হয়েছিল? মূল বিষয় ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার।’

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে হানাদার বাহিনী এ দেশকে দখল করেছিল বিধায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল সেদিন। স্বাধীনতার এত বছর পরে সব অধিকার আজ ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। গত তিন থেকে চারটি নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি।

খসরু বলেন, লোকজন যখন আমাকে জিজ্ঞেস করে আপনাদের আন্দোলন কি আবার নতুন করে শুরু হবে? নতুনভাবে আন্দোলন শুরু হওয়ার কিছু নেই। ওই যে ৯৫ শতাংশ মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায়নি সেটাও আন্দোলনের অংশ। ওই ৯৫ শতাংশ মানুষ আমাদের আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। সবাই বিএনপির চলমান আন্দোলনে এখনও আছে, সামনেও থাকবে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত। আমরা হালুয়া রুটি খাওয়ার জন্য আন্দোলন করিনি। এমপি বা মন্ত্রী হওয়ার জন্য আন্দোলন করিনি। আমরা আন্দোলন করেছি বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য।

তিনি বলেন, আন্দোলন চলমান আছে। সে আন্দোলন আজ অনেক বেশি শক্তিশালী। ৭ জানুয়ারির আগে যত বেশি শক্তিশালী ছিল, তার পরে আরও বেশি শক্তিশালী হয়েছে। সব রাজনৈতিক দল আমাদের এ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। বাংলাদেশের সুশীল সমাজ যারা বিগত দিনে মুখ খুলতেন না, কথা বলতেন না তারা কিন্তু সবাই কথা বলছে। এ ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধেও নির্বাচন নিয়ে তারা কথা বলছে।

তিনি বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা এখানে আছেন। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি আগামী দিনে গণমাধ্যমের কী অবস্থা হবে সেটা তারা অনুধাবন করেন। ওনারাও চাচ্ছেন এ ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন হোক। তারাও এ সরকারের বিদায় চান। বাংলাদেশে আজ একটি ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে আমি অন্তত স্বাধীনতার পরে দেখিনি। যে ঐকমত্য রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, সুশীল সমাজ, কৃষক ও শ্রমিকের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে সে গণঐক্যকে সামনে নিয়ে আমরা এ সরকারের পতন ঘটাব।

আমীর খসরু বলেন, বিদেশিদের অভিনন্দন জানানোর অর্থ মানে এ নয় তারা নির্বাচনকে গ্রহণ করেছে। নির্বাচনের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা, জাতিসংঘসহ সব গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিষ্কারভাবে বলেছে এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়। দ্বিপাক্ষিক রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক থাকবে। ব্যবসা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ থাকবে। সেটার সঙ্গে অবৈধ সরকারকে গ্রহণ করার বিষয় এক নয়।

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের পরিচালনায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, এস এম ফজলুল হক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন।

এতে বিগত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ থেকে শুরু করে ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচন পর্যন্ত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির ৭০০ জন কারা নির্যাতিত নেতাকর্মী ও স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা প্রদান করা হয়।

RELATED ARTICLES

Leave a reply

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments