গৌতম কুমার মহন্ত,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
উত্তরাঞ্চলের শষ্যভান্ডার খ্যাত নওগাঁয় আমন ধান কাটা ও মড়াই পুরোদমে শুরু হয়েছে।প্রতিকূল আবহাওয়া ও পোকার আক্রমণে এ মৌসুমে আমন ধানের ফলন বিপর্যয়সহ বাজারে ধানের নায্য মুল্য না পেয়ে কৃষকরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ।স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কর্পোরেট কোম্পানিগুলো। কর্পোরেট কোম্পানি গুলোর বেঁধে দেয়া মুল্যের চেয়ে অধিক মুল্যে ধান কেনার কোন সুযোগ নেই।চলতি মৌসুমে আমন ধানের ক্ষেতে পোকার আক্রমণ,সার বীজ ও কীটনাশকের উর্দ্ধগতিসহ প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে জেলার কৃষকরা চরম বেকায়দায় পড়ে।সম্প্রতি জেলার সদর, মহাদেবপুর, পত্নীতলা, ধামুইরহাট, নিয়ামতপুর ও মান্দাসহ কয়েকটি উপজেলায় ৪ দিনের ভারী বৃষ্টি ও হালকা বাতাসের ফলে মাঠে জমে থাকা পানিতে আধা পাকা আমন ধান পড়ে যায়।বৃষ্টির পানিতে আধা পাকা আমন ধান দীর্ঘ সময় তলিয়ে থাকা এবং পোকার আক্রমণে কাংক্ষিত ফলনে বিপর্যয় ঘটে।চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পোকার আক্রমণে গত বছরের তুলোনায় এবছর বিঘা প্রতি ৩-৫ মন পর্যন্ত ফলন কম হয়েছে বলে কৃষকরা জানান।২৯ নভেম্বর শনিবার জেলার মহাদেবপুরে সপ্তাহিক হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতি মন আমন ধান জাত হিসেবে ১ হাজার ১ শ’ ২০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১ শ’ ৭০ টাকা দরে ক্রয় বিক্রয় করতে দেখা গেছে।ধানের হাটে শিবরাপুর গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আব্দুল খালেক, জোয়ানপুর গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম ও চকচকি গ্রামের কৃষক অজিত কুমার মন্ডল অভিযোগ করেন,একদিকে পোকার আক্রমণ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধানের ফলন বিপর্যয় অন্যদিকে হাটে ধানের নায্য মুল্য না পেয়ে তারা রীতিমতো ক্ষুব্ধ।জেলার প্রান্তিক কৃষকদের অভিযোগ,বিভিন্ন এনজিও এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আমন ধানের চাষ করতে গিয়ে তারা চরম বেকায়দায় পড়েছে।আমন ধানের ফলন বিপর্যয় এবং হাট বাজারে ধানের নায্য মুল্য না পাওয়ায় ঋণ পরিশোধ করা নিয়ে কৃষকদের মনে দুঃষ চিন্তার বাসা বেঁধেছে।কৃষকদের মতে মৌসুমের শুরুতেই প্রতি মন নতুন আমন ধান কমপক্ষে ১ হাজার ৫ শ’ টাকা হলে তারা ধান চাষে লাভের মুখ দেখবে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে,চলতি মৌসুমে নওগাঁর ১১ উপজেলায় ১ লাখ ৯৩ হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে।চলতি মৌসুমে এ ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭২৮ মেট্রিক টন। ইতোমধ্যেই জেলার অধিকাংশ আমন ধান কাটা ও মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিশ্চিত করেন।

