এইচ এম সাগর (হিরামন):
মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাস আর বীর শহীদদের অমর ত্যাগকে স্মরণ করে আজও বাংলাদেশের মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। সেই বীরত্বগাথার স্মৃতি ধরে রাখতে ২৯ নভেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় বারোআড়িয়া বাজার সংলগ্ন স্মৃতিসৌধ চত্বরে অনুষ্ঠিত হলো শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জ্যোতিষ ও আজিজের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও মিলাদ মাহফিল। স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গকারী এই দুই বীরের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাতে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গন যেন এক পবিত্র আবেগে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলায় ভরে ওঠে। অনুষ্ঠানে শহীদ পরিবারবর্গ, বটিয়াঘাটার বীর মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দ, বটিয়াঘাটা উপজেলা প্রশাসন এবং বারোআড়িয়া শহীদ স্মরণী মহাবিদ্যালয় সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদদের প্রতি ফুলের শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। শহীদদের স্মরণে পাঠ করা হয় দোয়া ও মিলাদ। সেখানে সকলেই তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতাপাঠ এবং শহীদদের প্রতি এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বটিয়াঘাটা শাখার আহবায়ক মোঃ ফেরদৌস শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আবু বকর মোল্লা। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ খুলনা জেলা শাখার আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু জাফর শেখ। বিশেষ অতিথি ছিলেন, যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা বিনয় কৃষ্ণ সরকার এবং বারোআড়িয়া পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এস আই আব্দুর রহিম। এছাড়াও খুলনা জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধারা যথাক্রমে, জিয়াউর রহমান জিকু, মোঃ কামরুল ইসলাম, নুর ইসলাম মানিক, বিশ্বাস শামছুর রহমান, আব্দুল মান্নান সরদার, প্রশান্ত গোলদার, আব্দুস সাত্তার, আব্দুস সালাম শেখ, আ: সেলিম, প্রহলাদ টিকাদার, অনিল কুমার গোলদার প্রমুখ।
এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, বারোআড়িয়া শহীদ স্মরণী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ শেখ মো: তোরাব আহমেদ ফিরোজ, সুরখালী ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আবু বক্কর গাজী, বর্তমান সভাপতি আলমগীর শেখ সহ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও এলাকাবাসী। বক্তারা বলেন, শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও মিলাদ মাহফিল আয়োজনই একমাত্র লক্ষ্য নয়, বরং মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস ও ত্যাগের স্মৃতি আজ বিলুপ্ত হতে বসেছে। এই সত্যই আমাদের বড় উদ্যোগের কারণ। আগামীর প্রজন্ম যেন মুক্তিযুদ্ধের এই পবিত্র ইতিহাস হৃদয়ে ধারণ করতে পারে, সে দায়িত্ব আমাদের সবাইকে কাঁধে তুলে নিতে হবে। স্বাধীনতার অমর ইতিহাস বুকে ধারণ করে আগামী দিনের পথ চলায় নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়েই অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।

