নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ফ্লাই ফার ইন্টারন্যাশনাল ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগে ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশাল বিক্ষোভ এবং সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেছেন। তারা দাবি করেন, তারা ফ্লাই ফার গ্রুপ, ফ্লাই ফার টেক, ফ্লাই ফার ট্রিপ এবং ফ্লাই ফার লেডিসের পাশাপাশি ভ্যালেন্সিয়া এয়ার ট্রাভেলস এন্ড ট্যুর লিমিটেড ও ডায়নামিক ট্রাভেলস নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করেছে।
বক্তারা বলেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে টাকা দিয়ে টিকিট, হোটেল বুকিং, হজ ও বিদেশ ভ্রমণ প্যাকেজের জন্য পরিষেবা পায়নি। প্রতারণার শিকার এমন কয়েকশ গ্রাহক একত্রিত হয়ে এখন এই মামলায় যৌথ একীভূত প্রচেষ্টা চালাবেন। সমাবেশে উপস্থিত এক ভুক্তভোগী বললেন,
“আমি ভ্যালেন্সিয়া অফিসে গিয়েছিলাম — তারা বলেছিল সব ঠিক হবে। এরপর থেকে ফোন বন্ধ ও অফিস খালি।”
বিক্ষুবিত গ্রাহকরা বলেন যে, ভ্যালেন্সিয়া এয়ার ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরের অফিস ঢাকা পুরানা পল্টন এলাকায় অবস্থিত (প্যারামাউন্ট হাইট, দ্বিতীয় তলা, বক্স কালভার্ট রোড), ফোন নম্বর 01989925572। অপর দিকে, ডায়নামিক ট্রাভেলসের অফিস বনানী সি/এ এলাকায় (বাশাতি হরাইজন, ৭ম তলা, এপি টি # এ-৭, প্লট # ২১, রোড # ১৭, ব্লক সি), ফোন নম্বর +8802222274217 ও +8802 222276022-23 উল্লেখ করেছেন। তারা অভিযোগ করেন যে, এসব এজেন্সি ফ্লাই ফার গ্রুপের নামে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছিল — অর্থ সংগ্রহ ও ভ্রমণ সেবা বিক্রির নামে।
প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া এক আইনজীবী বলেন,
“এখানে প্রতারণার ধরন স্পষ্ট: গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সেবা না দেওয়া। আমরা একত্রিতভাবে মামলা করব এবং সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার দাবি করব।”
বিক্ষোভ সভার পর, গ্রাহকগণ একটি স্মারকলিপি হাতে নিয়ে সিভিল এভিয়েশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছেন। তারা দাবি করছেন —
-
শিল্প পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত এজেন্সিগুলোর লাইসেন্স বাতিল করা হোক
-
গ্রাহকদের টাকা যথাযথ ফিরিয়ে দেওয়া হোক
-
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আইনানুগ শাস্তি পান
-
ভবিষ্যতে অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি (OTA) খাতকে কঠোর নিয়ন্ত্রনে আনা হোক
এই বিক্ষোভকে ঘিরে প্রেসক্লাবের সামনের এলাকা কিছুক্ষণ নিয়ন্ত্রণরেখায় ছিল। সাংবাদিকদের বক্তব্য নেয়া ও প্রতিবেদন তৈরি করার সময় বেশ কিছু ভুক্তভোগী ও আইনজীবী বক্তব্য দেন।
সিভিল এভিয়েশন (CAAB) ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার প্রতি ইতিমধ্যে নজর দিয়েছে। তারা বলেছে, যদি প্রমাণ পাওয়া যায় যে এসব এজেন্সি অনুমোদনবিহীন বা লাইসেন্সবিহীনভাবে ব্যবসা করেছে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সাইবার ক্রাইম বিভাগও তদন্ত শুরু করতে পারে।
এক অবস্থা বলতে হবে: এই ধরনের প্রতারণার বিরুদ্ধে গ্রাহক সচেতনতা ও সাংবাদিক দৃষ্টির ভূমিকা অপরিহার্য। প্রেসক্লাব-সমক্ষে এই বিক্ষোভ একটি শক্তিনেত্রীর নিদর্শন—যেখানে জনগণ সরাসরি দাবি জানাচ্ছে ন্যায্যতা ও প্রতিকার।

