গৌতম কুমার মহন্ত,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর মান্দায় মোহরানার টাকা নিতে এসে তালাক-প্রাপ্ত পাখি আক্তারের (২৮) রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।তবে এটা হত্যা নাকি দুর্ঘটনা এ নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন চলছে।২৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের হলুদঘর মোল্লাপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন সড়কের পাশ থেকে তালাক-প্রাপ্ত পাখি আক্তারের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়,পাখি আক্তার রাজশাহীর তানোর উপজেলার চকরথিরাম গ্রামের নবির উদ্দিন সরদারের কন্যা।এদিন ভোরে স্থানীয়রা তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়।পুলিশ ওই মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠিয়েছে।পাখি আক্তারের স্বজনরা জানায়,গত তিন মাস আগে মোবাইল ফোনে মাধ্যমে মান্দা উপজেলার দাওয়াইল গ্রামের জিয়ারুলের পুত্র তাইজুল ইসলামের(১৭) সঙ্গে পাখি আক্তারের পরিচয় হয়।এ পরিচয়ের সময় এক লাখ টাকা মোহরানায় তাদের বিয়ে হয়। তবে গত ১৫-২০ দিন আগে স্থানীয় মাতব্বর রাজ্জাক ও পরিবারের চাপে তাজুল ইসলাম তার স্ত্রী পাখি আক্তারকে মোহরানার এক লাখের মধ্যে ৮০ হাজার টাকা দিবে বলে তালাক দেয়। তবে মাতব্বর রাজ্জাক কৌশলে ৮০ হাজার টাকার মধ্যে মাত্র ১৫ হাজার টাকা তালাকের দিন পাখির হাতে দেয় এবং বাকি টাকা কয়েক দিন পরে দিবে বলে তাকে তার বাড়ি পাঠিয়ে দেন।পাখি আক্তার পরবর্তীতে জানতে পারে তাকে মাত্র ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে কৌশলে তালাকের কাগজে সাক্ষর নেয়া হয় এবং মাতব্বর রাজ্জাককে ওইদিনই ২০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেয় তাজুলের পরিবার।ওই ২০ হাজার টাকার মধ্যে মাতব্বর রাজ্জাক নিজের কাছে ৫ হাজার রেখে মাত্র ১৫ হাজার টাকা দেন পাখি আক্তারকে।স্থানীয় হলুদঘর গ্রামের
রশিদুল ইসলাম কবিরাজ,আলিমুদ্দীন, ফেটগ্রামের মাসুদ ও গোপালপুর বাজার এলাকার সাইফুলসহ অনেকেই জানান,গত ২৪ সেপ্টেম্বর বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত ওই ৫ হাজার টাকা নিতে মাতব্বর রাজ্জাকের পিছনে পিছনে ঘুরছিল পাখি।তবে অভিযুক্ত মাতব্বর রাজ্জাক ও তাজুল ইসলামের সঙ্গে এবিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করে তাদের সাক্ষাৎ পাওয়া যায়নি।পাখির পিতা নবির উদ্দিন সরদারের অভিযোগ, তার কন্যাকে হত্যা করা হয়েছে।আর এ হত্যার পিছনে মাতব্বর রাজ্জাক ও তাজুল পরিবারের যোগ-সুত্র থাকতে পারে।কয়েক দিন আগে তাজুলের মা তাদের বাড়ি গিয়ে পাখিকে হত্যার হুমকি দিয়ে এসেছিল বলেও জানান,পিতা নবির উদ্দিন।এব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনসুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।যদি এটা হত্যাকান্ড হয় তবে এর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

