কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের গ্রাম পুলিশ নিয়োগ–২০২৫–এ বৃহদায়তন অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চাকরি বঞ্চিত প্রার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর ২০২৫) বিকেল ৩টায় ফুলবাড়ী প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলন শেষে নিয়োগ বাতিল করে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক পুনঃনিয়োগের দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চাকরি বঞ্চিত প্রার্থী লাবু মিয়া। তিনি অভিযোগ করেন—গত ২২ নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সভাপতিত্বে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও ফলাফল প্রস্তুত করা হয়েছে বিধি-বহির্ভূতভাবে।
তিনি বলেন, “মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনায় না নিয়ে তদবির, ব্যক্তিগত পছন্দ–অপছন্দ এবং অর্থ লেনদেনের ভিত্তিতে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। যোগ্য প্রার্থীদের সরিয়ে অযোগ্যদের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।”
লাবু মিয়া আরও জানান, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িত কয়েকজন ব্যক্তি ৬ লাখ টাকার বিনিময়ে এক প্রার্থীকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে দৈনিক সমকালের ফুলবাড়ী উপজেলা প্রতিনিধি শাহিনুর রহমান শাহিন নাকি সদর ইউনিয়নের চন্দ্রখানা গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে হাসানুরের কাছ থেকে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরি নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন—এমন তথ্য তাদের হাতে রয়েছে বলে দাবি করেন।
এসব অভিযোগের কারণে বহু যোগ্য ও মেধাবী প্রার্থী চূড়ান্ত তালিকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলেও তারা দাবি করেন।
“প্রতি পদের জন্য ৫ লাখ”—কমিটির কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে সরব প্রার্থীরা
“নিয়োগ কমিটির কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতিটি পদের জন্য ৫ লক্ষাধিক টাকা লেনদেনের অভিযোগ উঠলেও এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো তদন্ত শুরু হয়নি। এ ধরনের নিয়োগ বাণিজ্য শুধু যোগ্যদের বঞ্চিতই করে না, বরং গ্রাম পর্যায়ে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষার গুরুত্বপূর্ণ পদটিকে দুর্নীতির হাতিয়ার বানায়।”
লিখিত বক্তব্যে প্রার্থীরা তিন দফা দাবি উপস্থাপন করেন—
১. নিয়োগসংক্রান্ত সব অভিযোগের তদন্তে স্বতন্ত্র, নিরপেক্ষ ও উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে।
২. তদন্তে দোষী প্রমাণিত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
৩. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে পুনঃনিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে।
তাদের ভাষায়—“স্বচ্ছতা না থাকলে এ নিয়োগ জনগণের আস্থা হারাবে এবং প্রশাসনের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ও স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা।
চাকরি বঞ্চিত প্রার্থীরা আরও ঘোষণা দেন—
দাবি বাস্তবায়ন না হলে তারা মানববন্ধন, স্মারকলিপি প্রদানসহ ধারাবাহিক শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবেন।
তারা বলেন, “আমরা ন্যায্য অধিকার চাই। স্বচ্ছ নিয়োগই সকলের দাবি—এখানে অন্যায়ের কোনো স্থান নেই।”

