রিয়াজুল ইসলাম, হাতিয়া প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আবারও বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) পর্দায় ফিরছে দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক জনপ্রিয় শিশু-কিশোর প্রতিভা সন্ধানী অনুষ্ঠান “নতুন কুঁড়ি”। নতুন আঙ্গিক, আধুনিক প্রযুক্তি এবং সৃজনশীল উপস্থাপনায় সাজানো এই আয়োজন শুরু থেকেই শিশুদের শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বিকাশে অনন্য ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ উদ্যোগে যাত্রা শুরু করা “নতুন কুঁড়ি” একসময় গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহরের অলিগলি পর্যন্ত শিশু-কিশোরদের স্বপ্নের মঞ্চে পরিণত হয়েছিল। গান, আবৃত্তি, অভিনয়, নৃত্যসহ নানা বিভাগে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের লুকিয়ে থাকা প্রতিভাবান শিশুদের জাতীয় পর্যায়ে পরিচিত করে তুলেছিল এ অনুষ্ঠান। এখান থেকেই উঠে এসেছে বহু তারকা শিল্পী, যারা পরবর্তীতে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন সমৃদ্ধ করেছেন।
কিন্তু প্রায় দুই দশক আগে, রাজনৈতিক অবহেলা ও সংস্কৃতিবিরোধী মনোভাবের কারণে, তৎকালীন পলাতক স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সরকার এই ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকের। এর ফলে এক প্রজন্মের মেধা বিকাশ ও সাংস্কৃতিক চর্চার সুযোগ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়।
এবারের “নতুন কুঁড়ি” আগের চেয়ে আরও বর্ণিল ও সমসাময়িক রূপে ফিরছে। যুক্ত হচ্ছে অত্যাধুনিক সেট ডিজাইন, উচ্চমানের সাউন্ড-লাইটিং ব্যবস্থা, ডিজিটাল সম্প্রচার সুবিধা এবং শিশুদের উপযোগী সৃজনশীল কনটেন্ট। আয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রতিযোগিতার কাঠামোতেও আসছে পরিবর্তন—যাতে প্রতিটি প্রতিযোগী শুধু দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগই না, বরং শেখা ও উন্নতির পথও পাবে।
সাংস্কৃতিক বিশ্লেষকদের মতে, “নতুন কুঁড়ি”-র পুনরাগমন শুধু একটি অনুষ্ঠান ফিরে আসা নয়; এটি দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং নতুন প্রজন্মের সৃজনশীল বিকাশের এক নবজাগরণের সূচনা। অনেকের বিশ্বাস, এই মঞ্চ আবারও হয়ে উঠবে বাংলাদেশের শিশু প্রতিভাদের স্বপ্নপূরণের সোপান এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক অঙ্গনে প্রাণের সঞ্চারক।

